মেসি, নেইমার, এমবাপে- তিন মহাতারকার উপস্তিতিতেও হোঁচট খেতে হলো প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে। ১১ নম্বরে থাকা দল স্টেডে ডি রেইমসের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করতে বাধ্য হলো পিএসজি। ফ্রেঞ্চ লিগ কাপে আগের ম্যাচে একাই ৫ গোল করেছিলেন এমবাপে। পিএসজি জিতেছিলো ৭-০ গোলের ব্যবধানে। এমবাপেকে নিয়ে তাই সমর্থকদের আশা ছিল, রেইমসের বিপক্ষে হোক কিংবা আর দু’এক ম্যাচের মধ্যেই রেকর্ডটা গড়ে ফেলবেন ফরাসি এই তারকা।
ক্লাবের জার্সিতে এখনও পর্যন্ত ১৯৬ গোল করেছেন তিনি। আর ৪ গোল করতে পারলে সর্বোচ্চ গোলদাতা এডিনসন কাভানিকে ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি। কিন্তু রোববার রাতে রেইমসের বিপক্ষে চার গোল তো দুরে থাক, একটি গোলও করতে পারেনি এমবাপে। মেসিও গোল পাননি। একটি গোল পেয়েছেন নেইমার। গোলের পরই অবশ্য ১০ জনের দলে পরিণত হয় পিএসজি। ৫৯তম মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ থেকে বের হতে বাধ্য হন মার্কো ভেরাত্তি।
কিন্তু তার এই গোলের লিড ধরে রাখতে পারেনি পিএসজি। ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে, ইনজুরি সময়ের ৬ মিনিট পার হওয়ার পর আচমকা পিএসজির জালে বল জড়িয়ে দেয় রেইমস। এর ফলেই ১-১ গোলে ড্র নিয়ে শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়তে হলো ফরাসি জায়ান্টদের।
ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে আগের ম্যাচেও হারতে হয়েছিলো পিএসজিকে। রেনের কাছে ওই ম্যাচে হেরেছিলো ১-০ গোলে। এরপর অবশ্য সৌদি আরবে প্রীতি ম্যাচ খেলতে এসে জিতেছে ৫-৪ গোলে। এরপর কোপা ডি ফ্রান্সের ম্যাচে পায়েস ডি ক্যাসলের বিপক্ষে জিতেছে ৭-০ গোলে। সব মিলিয়ে ২ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট হারিয়েছে পিএসজি। তবুও শীর্ষে রয়েছে তারা। ২০ ম্যাচ শেষে পিএসজির মোট পয়েন্ট ৪৮। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লেন্সের পয়েন্ট সমান ম্যাচে ৪৫। ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মার্শেই।
২৬ পয়েন্ট নিয়ে ১১তম স্থানে রয়েছে রেইমস। মজার বিষয় হলো ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে এ নিয়ে টানা ১২ ম্যাচ অপরাজিত তারা। পিএসজির সঙ্গে লিগে প্রথম পর্বের ম্যাচেও গোলশূন্য ড্র করেছিলো তারা। তবে সব মিলিয়ে টানা ১৪ ম্যাচ অপরাজিত রেইমস।পিএসজি মিডফিল্ডার দানিলো পেরেইরা বলেন, ‘এই ম্যাচকে কিভাবে বর্ণনা করবো, সে সম্পর্কে কোনো শব্দ আমার কাছে নেই। আমাদের মানসিকতাতেই পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা যদি তাই না করি, তাহলে আমাদের জন্য সব কিছু কঠিন হবে এবং একের পর এক ম্যাচে এভাবে ভুগতে হবে।’
চলতি বছরে (২০২৩) এই প্রথম মেসি, নেইমার এবং এমবাপেকে একসঙ্গে নিয়ে একাদশ সাজিয়েছেন পিএসজি কোচ ক্রিস্টোফে গ্যালতিয়ের। কিন্তু প্রথমার্ধে তারা কোনো গোলের দেখাই পায়নি। পুরো প্রথমার্ধে রেইমসের জালে মাত্র একবার শট নিতে পেরেছিলো তারা। কিন্তু গোল করতে সক্ষম হয়নি।
মূলত, রেইমসের সলিড ডিফেন্সেই পিএসজিকে গোল পেতে দেয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে যে কারণে ভিতিনহাকে বসিয়ে ভেরাত্তিকে মাঠে নামান কোচ গ্যালতিয়ের। খেলায়ও কিছুটা গতি আসে এবং রেইমসের জালে চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয় পিএসজি। ৫১ মিনিটে মেসির শট ধরে অসাধারণ এক ড্রিবলে ইয়েহভ্যান দিয়ুফকে পরাস্ত করেন নেইমার। এরপর দারুণ এক শটে বল প্রবেশ করান রেইমসের জালে।
মাঠে নামার ১৪ মিনিটের মধ্যেই লাল কার্ড দেখে ফেলেন ভেরাত্তি। ৫৯তম মিনিটে জুনিয়া ইতোকে হার্ড ট্যাকল করেন তিনি। যে কারণে ভিএআর দেখে রেফারি লাল কার্ড দেখান ভেরাত্তিকে। তবুও পিএসজি আক্রমণ অব্যাহত রাখে। সার্জিও রামোসের দুটি হেড ঠেকিয়ে দেন রেইমস গোলরক্ষক। আশরাফ হাকিমি একটি গোলও দিয়েছিলেন।
কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল করে দেন রেফারি। ১-০ গোলেই ম্যাচ শেষ হতে যাচ্ছিল। কিন্তু ইনজুরি সময়ের একেবারে শেষপ্রান্তে, ৯৬তম মিনিটে এসে গোল দিয়ে বসে রেইমস। গোলদাতা ফোলারিন বালোগুন। শেষ পর্যন্ত খেলা শেষহলো ১-১ ড্র-এর মধ্য দিয়ে।