মিয়ানমারে ১১২ রোহিঙ্গার কারাদণ্ড

অবৈধভাবে মিয়ানমার ছাড়ার চেষ্টা করায় ১১২ জন সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা নাগরিককে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ১২ জন শিশুও রয়েছে। গত ৬ জানুয়ারি মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলের আয়াবতি অঞ্চলের বোগালে শহরের একটি আদালত এ কারাদণ্ড দেন। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দণ্ডপ্রাপ্ত শিশুদের মধ্যে যে পাঁচজনের বয়স ১৩ বছরের কম তাদের দুবছরের দণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি শিশুদের তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এসব শিশুকে ‘শিশু প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে’ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়া একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা থেতে তাদের আটক করা হয়।

রোহিঙ্গাদের মূল বাসভূমি হলো মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। কিন্তু মিয়ানমারের কোনো সরকারই তাদের দেশটির নাগরিক বলে স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে সংখ্যালঘু মুসলিম এ জনগোষ্ঠীটি মৌলিক সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে তাদের ওপর চরম নির্যাতন চালানো হয়।

২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। কিন্ত যেসব রোহিঙ্গা মিয়ানমারে রয়ে গেছেন, তাদের ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে, যেখানে তাদের গতিবিধির ওপর কঠোর নজরদারি চালানো হয়। অসহায় জীবন থেকে বাঁচতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গারা ছোট ছোট নৌকায় করে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করেন। কয়েকদিন আগেও ইন্দোনেশিয়ার উপকূল থেকে কয়েক সপ্তাহ সাগরে ভেসে থাকা ১৮৫ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার হাই কমিশনার বলছে, সম্প্রতি রোহিঙ্গা নাগরিকদের মধ্যে ইউরোপে পাড়ি জমানো প্রবণতা অন্যান্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে প্রায় ছয় গুণ বেশি রোহিঙ্গা ভয়ংকর সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।

সূত্র: আল-জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *