মার্কিন নিষেধাজ্ঞাভুক্ত রুশ জাহাজের পণ্য ভারতের বন্দর থেকে আনা হবে

মার্কিন নিষেধাজ্ঞাভুক্ত রাশিয়ার জাহাজে আসা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য ভারতের কোনো বন্দর ব্যবহার করে দেশে আনা হবে।  সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণায়গুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।  জানা যায়, সম্প্রতি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে রাশিয়ার একটি জাহাজ মোংলা বান্দরে আসছিল। কিন্তু জাহাজটি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তালিকাভুক্ত জানার পর বিষয়টি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় জাহাজটিকে বন্দরে আসতে আপত্তি জানায়।  এরপর জাহাজটি ফিরে যায়।  তবে রাশিয়ার এ জাহাজটি থেকে রূপপুর প্রকল্পের পণ্য দেশে আনার বিষয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।  এ বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে।  সংশ্লিষ্ট দেশ রাশিয়া ও ভারতের সঙ্গে কথা বলে বিকল্প উপায় বের করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রাশিয়ার সার্বিক সহযোগিতায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।  এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রিঅ্যাক্টরসহ সব ধরনের যন্ত্রপাতি রাশিয়া থেকে তৈরি করে সমুদ্র পথে দেশে আনা হয়।  ইতোমধ্যে রিঅ্যাক্টরসহ ভারী ও গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ যন্ত্রপাতি দেশে আনা হয়েছে। এসব যন্ত্রপাতি জাহাজে করে মোংলা বন্দরে আনা হয়। এরপর মোংলা বন্দর থেকে পদ্মা নদী দিয়ে ঈশ্বরদী রূপপুর প্রকল্প সংলগ্ন নদীবন্দরে আনা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে রাশিয়ার জাহাজটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  বিষয়টি রুশ কর্তৃপক্ষকেও বোঝানা হয়েছে।  আমাদের সব যন্ত্রপাতিই বলতে গেলে চলে এসেছে।  এখন এটাতে খুব একটা সমস্যা হবে না মনে করি।  তাদেরকে অনুরোধ করা হয়েছে ভারত বা কাছাকাছি অন্য কোথাও থেকে যাতে পণ্যগুলো শিফট করে আমাদের জাহাজে দেওয়া যায়।

ওই সূত্রগুলো আরও জানায়, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি একটি মেগা প্রকল্প এবং সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প। এ কারণেই এই প্রকল্পের পণ্য আনার ব্যাপারে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। যে জাহাজটি পণ্য নিয়ে মোংলা বন্দরে আসছিল সেটি আগে ভারতের কোচিন বন্দরে পণ্য নামিয়ে তারপর বাংলাদেশের মোংলা বন্দরের দিকে আসতে থাকে।

যেহেতু জাহাজটি ভারতের বন্দর থেকে আসছিল তাই ভারতের সুবিধাজনক কোনো সমুদ্র বন্দর থেকে এর পণ্য নামিয়ে বাংলাদেশের আনার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। আবার কাছাকাছি অন্য কোনো জায়গা থেকে বাংলাদেশের জাহাজে আনা যায় কি না- সেটাও চিন্তা করা হচ্ছে।  বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ভারত থেকে আনার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না বলেও সূত্রগুলো জানায়।

বিষয়টি সম্পর্কে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমেরিকান নিষেধাজ্ঞার আওতায় জাহাজটি আছে এটা আমাদের জানা ছিল না। জাহাজটি আমেরিকার নিষেধাজ্ঞাভুক্ত জানার পর আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *