মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) চূড়ান্তভাবে টুইটারের মালিক হয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। চার হাজার ৪০০ কোটি ডলারে টুইটার কিনেছেন তিনি। এর মধ্যে সব টাকাই কী ইলনের একার? নাকি বিশাল অংকের এ চুক্তি করতে গিয়ে ধার-দেনা করতে হয়েছে বিশ্বের শীর্ষ এ ধনীকেও? আসুন জেনে নিই কীভাবে টুইটার কেনার অর্থ জোগাড় করেছেন ইলন-
আল জাজিরার তথ্য অনুযায়ী- চুক্তির প্রথম দিকে চার হাজার ৪০০ কোটি ডলারের মধ্যে নিজের ব্যক্তিগত অর্থের মধ্য থেকে এক হাজার ৫০০ ডলারের বেশি খরচ করতে চাননি ইলন। তাছাড়া, সরাসরি টেসলার শেয়ার বিক্রি না করে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার ঋণ নিতে চেয়েছিলেন ইলন মাস্ক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি লোন নেওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে টেসলার ১ হাজার ৫৫০ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। চলতি বছরের এপ্রিল ও আগস্টে দুই ধাপে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বিক্রি করেন ইলন।
সবশেষে টুইটার কিনতে ইলনের নিজস্ব অর্থ থেকে খরচ হয় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। যদিও এর আগে থেকেই টুইটারের ৯ দশমিক ছয় শতাংশ শেয়ারের মালিক ছিলেন তিনি। এদিকে চুক্তির মোট অর্থের মধ্যে বিনিয়োগকারী ও অন্যান্য বৃহৎ তহবিল থেকে ৫২০ কোটি ডলার যোগাড় করেছেন ইলন। সফ্টওয়্যার কোম্পানি ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন একাই ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন।
কাতারের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত দেশটির সার্বভৌম সম্পদ তহবিল ‘কাতার হোল্ডিং’ও এখানে বিনিয়োগ করেছে। তাছাড়া সৌদি যুবরাজ আলওয়ালিদ বিন তালাল তার মালিকানাধীন প্রায় ৩৫ লাখ ডলারের শেয়ার মাস্ককে হস্তান্তর করেন। ইলন মাস্ক বলেন, বিনিয়োগে যারা বা যেসব প্রতিষ্ঠান অবদান রেখেছে, তারা টুইটারের শেয়ারহোল্ডার হবে।
এদিকে বিনিয়োগকারীদের সহায়তার পরও বাকি থাকা প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি ডলার আসে ব্যাংক ঋণ থেকে। যেসব ব্যাংক থেকে ইলনে ঋণ নিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- মার্কিন বিনিয়োগ ব্যবস্থাপা ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান মরগান স্ট্যানলি, ব্যাংক অব আমেরিকা, জাপানি মিতসুবিশি ইউএফজে ফিনানশিয়াল গ্রুপ ও মিজুহো ব্যাংক, ব্রিটিশ ব্যাংক বার্কলেস এবং ফ্রান্সের ব্যাংক সোসিয়েট জেনারেল ও বিএনপি পারিবাস।
ইউএস সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে দাখিল করা নথি অনুসারে, শুধু মরগান স্ট্যানলি ইলনকে প্রায় ৩৫০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। এসব ঋণের দায়ভার নিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া ইলন ব্যক্তিগতভাবে নয়, প্রতিষ্ঠান হিসেবে টুইটারই এ ঋণ পরিশোধ করবে বলে জানা গেছে।