বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারলো পাকিস্তান

বাবর-রিজওয়ান জুটিই খেলা শেষ করে ফিরবেন— এমনটিই মনে করছিলেন অনেকে। তবে ১৩তম ওভারে দুর্দান্ত দুটি ডেলিভারিতে দলকে ম্যাচে ফেরান পেসার হাসান মাহমুদ।৩৭ বলে অর্ধশতক হাঁকানো পাকিস্তান অধিনায়ককে ফেরান তিনি। এর পর এক বল বিরতি দিয়েই স্টাম্প উড়িয়ে দেন হায়দার আলির। তবে ১১তম ওভারে জীবন পাওয়া মোহাম্মদ রিজওয়ান একপ্রান্ত ধরে রেখে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দিলেন। আর ঝড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচ জিতিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদ নাওয়াজ।

বাংলাদেশের দেওয়া ১৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।  ফলে ৭ উইকেটে হারল বাংলাদেশ। ম্যাচে বাবর আজম ও রিজওয়ান করেছেন যথাক্রমে ৫৫ ও ৬৯ রান। এ ছাড়া ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন মোহাম্মদ নওয়াজ। ২০ বলে ৪৫ রানের দাপুটে ইনিংস খেলেছেন তিনি। জোড়া উইকেট শিকারে হাসান মাহমুদ দলকে ম্যাচে ফেরালে ১৫তম ওভারে আক্রমণে আসেন সাকিব।  কিন্তু হিতে বিপরীতই হয়। তার ওভারে রিজওয়ান-নওয়াজ জুটি ১৫ রান তোলে। এর পর শরিফুল, সাইফউদ্দিন ও হাসান মাহমুদের ওভারে ধীরে ধীরেই এগোতে থাকেন তারা।

১৫তম ওভারে শরিফুলে বল অফসাইডে ঠেলেই সিঙ্গেল নিয়ে ৪২ বলে পঞ্চাশে পা রাখলেন রিজওয়ান। টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ের এক নম্বর ব্যাটারের এটি ২২তম ফিফটি। হাসানের ১৮তম ওভারে ১১ রান নিলে জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে ১২ বলে ১৪ রান। ১৯তম ওভার অনিয়মিত বোলার সৌম্য সরকারকে দিয়ে করান সাকিব। সে ওভারের ৫ম বলে রিজওয়ানকে আউট করে দেন সৌম্য। ৫৬ বলে চার বাউন্ডারিতে ৬৯ রানে ফিরলেন রিজওয়ান। তবে ততক্ষণে জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে গেছেন তিনি।

এ ওভারে রিজওয়ানের উইকেটসহ ৬ রান দেন সৌম্য। ফলে শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন পড়ে ৮ রান। সাইফউদ্দিনের হাতে বল তুলে দেন সাকিব। কিন্তু নামের সুবিচার করতে পারেননি সাইফ।  পর পর তিন বলে দুবার করে দৌড়ে লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে যান নওয়াজ। সাইফের ৫ম ডেলিভারিটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন পাকিস্তানকে। আজ ১১তম ওভারে বাবর-রিজওয়ান জুটি ভাঙার সুযোগ পেয়েছিলেন পেসার শরিফুল। কিন্তু ক্যাচ ফেলে দিয়ে সে সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ।

ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানকে জীবন দেন পেসার সাইফউদ্দিন। ১১তম ওভারে শরিফুলের ৪র্থ ডেলিভারিটি রিজওয়ানের পায়ের ওপর বল করেন। ফ্লিক শটে তা ফাইন লেগে পাঠান ব্যাটার। যেখানে ছিলেন সাইফউদ্দিন। কিন্তু সহজ ক্যাচটি জমাতে পারেননি তিনি। ৩২ রানে বেঁচে যান রিজওয়ান। জীবন পেয়ে রিজওয়ান হাঁকিয়েছেন হাফসেঞ্চুরি। বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ২৭ রান দিতে দুটি উইকেট শিকার করেছেন পেসার হাসান মাহমুদ। এক ওভারে ৬ রান দিয়ে একটি উইকেট পেয়েছেন সৌম্য সরকার। সবচেয়ে খরুচে বোলার হয়েছেন সাইফউদ্দিন।  ৩.৫ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি এ অলরাউন্ডার।

এর আগে ক্রাইস্টচার্চে আজ সকালে ব্যাট হাতে নেমে দুর্দান্ত দুটি হাফসেঞ্চুরি উপহার দেন লিটন দাস ও সাকিব আল হাসান। এ দুই তারকার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে একটি সময় মনে হচ্ছিল ২০০ ছুঁয়ে ফেলবে বাংলাদেশ। কিন্তু টেলএন্ডারদের ব্যর্থতায় ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রানে থামেন টাইগাররা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৭৩/৬ (শান্ত ১২, সৌম্য ৪, লিটন ৬৯, সাকিব ৬৮, আফিফ ১১, ইয়াসির ১, নুরুল ২*, সাইফ ১*; নাসিম ৪-০-২৭-২, হাসনাইন ৪-০-৩৮-০, ওয়াসিম ৪-০-৩৩-২, শাদাব ৪-০-৩১-০, নাওয়াজ ৩-০-৩৭-১, ইফতিখার ১-০-৭-০)

পাকিস্তান: ১৯.৫ ওভারে ১৭৭/৩ (রিজওয়ান ৬৯, বাবর ৫৫, হায়দার ০, নাওয়াজ ৪৫*, আসিফ ২*; হাসান ৪-০-২৭-২, তাসকিন ৪-০-৩২-০, শরিফুল ৪-০-৩০-০, সাইফ ৩.৫-০-৫৩-০, সাকিব ৩-০-২৮-০, সৌম্য ১-০-৬-১)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *