জিল্লুর রহমান জয়: পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা করতে চাইলে পরিযায়ী পাখিদের বাঁচতে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। ‘ম্লান করলে রাতের আলো, পাখিরা থাকবে আরও ভালো’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শনিবার (৮ অক্টোবর) পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস উদযাপন উপলক্ষে মহানগরীর কাজিহাটায় থাকা শিমুল মেমোরিয়াল নর্থ সাউথ স্কুল অ্যান্ড কলেজ হলরুমে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ রাজশাহী এবং বন অধিদপ্তরের আয়োজনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার আগে অতিথিরা সিএন্ডবি মোড়ে বেলুন উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন করেন।
আলোচনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহম্মেদ নিয়ামুর রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইসেন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিন সরদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি হাসপাতালের ডেপুটি চিফ ভেটেরিনারিয়ান ড. হেদায়েতুল ইসলাম আরিফ, সামাজিক বন বিভাগী রাজশাহীর সহকারী বন সংরক্ষক মেহেদীজ্জামান, শিমুল মেমোরিয়াল নর্থ সাউথ স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়াম্যান আরটিএন এম এ মান্নান খান ও রাজশাহী সেভ দি ন্যাচার অয়ান্ড লাইফের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
সভায় বক্তারা বলেন, পরিবেশ রক্ষায় এবং আবহাওয়ার ভারসাম্য ঠিক রাখতে পরিযায়ী পাখির গুরুত্ব অপরিসীম। এ পাখি শীত মৌসুমে আসে। পাখিগুলো শীত প্রধান দেশের হলেও শীতের সময় পুরো বনাঞ্চল বরফে ঢেকে যায়। নদী-নালাও বরফে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এতে তাদের খাবারের সংকট দেখা দেয়। সেইসঙ্গে প্রজননেরও সমস্যা হয়। সে কারণে এ পাখিগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে আসে। এ পাখিগুলো আসাতে দেশের পরিবেশের উন্নয়ন ও মাটির উর্বরতা বাড়ে।
তারা আরও বলেন, পরিযায়ী পাখি প্রায় তিনশ প্রজাতির হয়ে থাকে। এ পাখিগুলো মানুষকে যেমন আনন্দ দেয় তেমনি বাঁচতে সাহায্য করে। সেজন্য পরিযায়ী পাখি কোনোভাবেই শিকার ও হত্যা করা যাবে না। আর যদি কেউ করেন সরকারিভাবে জেল-জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, জেল-জরিমানাটা মুখ্য নয়। পাখি শিকার রোধে সবাইকে সচেতন হবে। সেইসঙ্গে পরিযায়ী পাখির উপকারিতা এবং এটা লঙ্ঘন করলে কী শাস্তির বিধান রয়েছে সে সম্পর্কে বেশি বেশি প্রচার করতে হবে। সেইসঙ্গে পাখিদের অবাধ বিচরণে রাতের আলোর সংখ্যা কমাতে হবে। এছাড়া এ পাখিদের অভয়ারণ্য করা এবং ব্যাপকভাবে বৃক্ষ রোপণের কথাও উল্লেখ করেন সবাই।