ইরানে পুলিশি হেফাজতে এক নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলমান বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে দেশটিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার ২৬ (সেপ্টেম্বর) ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি এক বিবৃতিতে এমন অভিযোগ করেছেন। খবর রয়টার্সের।
সম্প্রতি ইরানের কঠোর হিজাব আইন অমান্য করার অপরাধে পুলিশের হাতে আটক হন ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি। পরে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ-সহিংসতায় উত্তাল হয়ে ওঠে ইরান। এতে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোও।
তবে তেহরানের দাবি, দাঙ্গাবাজদের সমর্থন জানিয়ে ইরানে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন নুর নিউজকে বলেছেন, ওয়াশিংটন সবসময় ইরানের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে দুর্বল করার চেষ্টা করে, যদিও তা ব্যর্থ হয়েছে।
আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ২০ সেপ্টেম্বর ইস্তাম্বুলে বিক্ষোভ। ছবি সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কিছু নেতা এসব দাঙ্গাবাজকে সমর্থন এবং ইরানি শাসনব্যবস্থার সমর্থনে রাস্তায় লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিকে উপেক্ষা করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
ইরানে গত এক সপ্তাহ ধরে চলা দাঙ্গার বিরুদ্ধে রোববার রাজধানী তেহরানে শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছেন লাখ লাখ মানুষ। মিছিল থেকে দাঙ্গাবিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়। এসময় ‘যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মদদে’ দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তারা।
এদিকে, চলমান বিক্ষোভ-সহিংসতার বিষয়ে সোমবার ইরানি রাষ্ট্রদূততে তলব করেছে জার্মানি। তেহরানের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মুখপাত্র বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সম্ভাব্য সব কিছু নিয়েই চিন্তাভাবনা করবো। ইরানি নারীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে গত সপ্তাহে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
২৩ সেপ্টেম্বর তেহরানে সরকারপন্থিদের মিছিল। ছবি সংগৃহীত
অন্যদিকে, গত রোববার ব্রিটিশ ও নরওয়েজিয়ান রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছে তেহরান। দেশগুলোর বিরুদ্ধে চলমান অস্থিরতায় হস্তক্ষেপ ও শত্রুতাপূর্ণ মিডিয়া কভারেজের অভিযোগ তুলেছে ইরান।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের তথ্যমতে, গত ১৭ সেপ্টম্বর থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ-সহিংসতায় দেশটিতে অন্তত ৪১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, ইরান মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। পুলিশি হেফাজতে আমিনির মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।