৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন করলেন মমতা

৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো সোমবার (৩০ জানুয়ারি)। এদিন দুপুর ২টার দিকে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক প্রাঙ্গণে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। মঙ্গলবার সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে মেলাটি। উদ্বোধনী ভাষণে মমতা বলেন, অবশেষে বইমেলা একটি স্থায়ী জায়গা পেয়েছে। এখানে আসার ফলে বইমেলার আকর্ষণ যেভাবে বেড়েছে, তেমনি জায়গাও বেড়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে এবং আজ সারা বিশ্ব এই বইমেলায় মিলিত হয়েছে। এটি প্রকৃত অর্থেই একটি আন্তর্জাতিক বইমেলায় পরিণত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি খুব ক্ষুদ্র মানুষ। আমার সবটা কারও কারও পছন্দ না-ও হতে পারে। আমি সমালোচনার ঊর্ধ্বে নই। সমালোচনা করলে আমি বরং খুশিই হই। কারণ, সমালোচনা থেকে যদি কিছু শিখতে পারি, তার চেয়ে বড় জিনিস আর হতে পারে না। যে আমায় খারাপ বলে বলুক, তুমি বলো না- এটাই আমাদের শিক্ষা…।

তিনি বলেন, বই শুধু বইই নয়, বই হচ্ছে মানুষের জীবন, বাস্তব চেতনা। বই নতুন জিনিস জানতে শেখায়, আবিষ্কার করতে শেখায়। এখনো আমাদের অনেক কিছু শেখার বাকি। আমরা যতদিন বাঁচি, ততদিন শিখি। তাই বইয়ের আরেক নাম জীবন। বই হচ্ছে বিশ্বের লাইফলাইন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মমতার পরামর্শ, কম্পিউটার বা ইন্টারনেটে হয়তো অনেক কিছু পাওয়া যায়। কিন্তু ধুলো-মাটির গন্ধ বা কলমের স্বাদ পেতে হলে বইমেলায় আসতে হবে। এদিন বইমেলার উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে নিজের লেখা ছয়টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন মমতা ব্যানার্জী। এ নিয়ে তার লেখা মোট ১২৮টি বই প্রকাশিত হলো।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্পেনের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘বুকস অ্যান্ড প্রমোশন রিডিং’ বিভাগের মহাপরিচালক মারিয়া হোসে গালভেজ সালভাদর, স্পেনের রাষ্ট্রদূত হোসে মারিয়া রিদাও ডমিনগুয়েজ, বিশিষ্ট সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার আয়োজক বুক সেলারস অ্যান্ড গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু শেখর দে, গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়,

কবি সুবোধ সরকার, কৃষিমন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, পর্যটনমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, ফায়ার সার্ভিস মন্ত্রী সুজিত বসু, তৃণমুল সাংসদ দোলা সেন, বিধায়ক ও সংগীতশিল্পী অদিতি মুন্সি প্রমুখ।

বইমেলায় এবারের থিম কান্ট্রি স্পেন। স্বাভাবিকভাবে বইমেলার প্রাণকেন্দ্রে থাকছে স্পেনের বিশাল প্যাভিলিয়ন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, ইরান, বাংলাদেশ, ইতালি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, রাশিয়া, পানামা, কোস্টারিকা, গুয়েতেমালা, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, কিউবা, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের প্রায় ২০টি দেশ অংশগ্রহণ করছে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায়।

তবে অন্যবারের মতো এবারও বইমেলায় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে বাংলাদেশের বঙ্গভবনের আদলে তৈরি হচ্ছে প্যাভিলিয়নটি। এখানে অংশ নেবে দেশটির ৪৩টি প্রকাশনা সংস্থা। এবারের কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ দিবস পালিত হবে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন মেলায় যোগ দেবেন বাংলাদেশের প্রথিতযশা কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের খ্যাতিমান শিল্পীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *