আগামী মাস থেকে লোডশেডিং আর থাকবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সেই সাথে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমলে দেশেও সেই দাম সমন্বয় করা হবে বলেও জানান তিনি।
রোববার (১৪) আগস্ট বিদ্যুৎ ভবনে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জ্বালানি দর্শন ও বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অস্থির বিশ্ব বাজার শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নসরুল হামিদ বলেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকার সাধারণ মানুষকে ঝুঁকিতে রাখতে চায় না। বিশ্বে জ্বালানির দাম কমেছে। সামনে সেটা সমন্বয়ের চিন্তা আছে সরকারের। আগামী দুই এক মাসের মধ্যে সমন্বয় করা হবে। সবাই ধৈর্য ধরে সহযোগিতা করলে পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, আগামী মাসের শেষ দিকে লোডশেডিং থেকে পুরোপুরি বের হয়ে আসবো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকের পরিস্থিতি খুবই অস্বাভাবিক, কোনো একটি নির্দিষ্ট দেশে নয়, সারাবিশ্বেই মন্দাভাব তৈরি হয়েছে। অনেকেই বুঝেও ভান ধরে থাকেন। ভর্তুকি দিয়ে সাশ্রয়ী দামে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এটা জনবান্ধব সরকার, লুটপাট করা বিএনপি জামাত জোট সরকার না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দর্শন ছিল যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, তখন গ্যাসের ব্যবহার ছিলই না। সে কারণে বড় বড় কোম্পানি গ্যাস ফিল্ড বিক্রি করে তেলের দিকে গেছে। সেই সময়ে বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করেছিলেন গ্যাসের গুরুত্ব।অর্থনৈতিক ভঙ্গুর অবস্থা ওই ধরনের সিদ্ধান্ত আমাদের সাহসী হওয়ার শিক্ষা দেয়।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লা এম আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব বিইআরসির হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত। ২০২৫ সালের মধ্যে নিজস্ব কয়লার ব্যবহার বাড়ানো না গেলে সঙ্কট আরও বৃদ্ধি পাবে। বিদ্যুতে দাম অনেক বেড়ে যাবে। একবারে এভাবে তেলের দাম বাড়ানো উচিত হয়নি। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কারণে দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার। তবে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন অনুযায়ী এই দাম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমিশনের।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর জ্বালানি নীতি থেকে বের হয়ে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানে গুরুত্ব না দেওয়ায় গ্যাসের সঙ্কট হয়েছে।
জ্বালানি সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, ২০২৫ সালের মধ্যেই দেশের গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে বড়ো রকম উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, পিএসসি আপডেট করার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা আশা করছি এ বছরের শেষের দিকে বিডিং রাউন্ড আহবান করা সম্ভব হবে। আমরা জ্বালানির বহুমুখীকরণের দিকে যাচ্ছে। কয়লার দিকে মনোযোগ দেওয়ার অবকাশ রয়েছে।
এফইআরবির চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীর এর সভাপতিত্বে মূল সঞ্চালনা করেন এফইআরবির ইডি রিসান নসরুল্লাহ।