শীতে বলিউড সুন্দরীদের সিক্রেট বিউটি রুটিন

শীতের শুষ্ক ত্বকের জন্য মন খারাপ করে যত্ন নেওয়াই ছেড়ে দেন অনেকে। কিন্তু জানেন তো শুধু আমরা সাধারণ মানুষই না, বিশ্বজয়ী সুন্দরী বলিউড অভিনেত্রীরাও এই শীতে বাড়তি যত্ন নেন সৌন্দর্য ধরে রাখতে। তাদের সৌন্দয্যের গোপন রহস্য আসলে কী! আসুন জানার চেষ্টা করি-

ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন: বিশ্বসুন্দরীর বিউটি সিক্রেট তো সকলেই জানতে চাইবেন। তবে ঐশ্বরিয়ার মতো ত্বক পেতে গেলে বেশ যত্ন নিতে হবে। নিয়মিত ডায়েট এবং এক্সারসাইজের মধ্যে থাকেন বচ্চন পরিবারের পুত্রবধূ। মুখের পোড়াভাব কিংবা কোনো ধরনের দাগছোপ মেলানোর জন্য তিনি ভরসা করেন ঘরোয়া টোটকার ওপরই। বেসন, হলুদ এবং দুধ মিশিয়ে একটা প্যাক বানিয়ে সপ্তাহে তিনদিন লাগান তিনি। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে শসার তৈরি ফেসপ্যাক ব্যবহার করেন নিয়মিত।

দীপিকা পাড়ুকোন

ত্বক পরিষ্কার রাখার জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করেন দীপিকা পাড়ুকোন। নিয়মিত ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি খান, যাতে শরীর থেকে সব টক্সিন বেড়িয়ে যায়। পুষ্টিকর খাবারও খান, যা থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সমৃদ্ধ। এছাড়া ত্বক যাতে শুষ্ক না হয়ে যায়, সেজন্য সব সময় ফেসিয়াল মিস্ট ব্যবহার করে থাকেন ‘বাজিরাও মাস্তানি’খ্যাত এই তারকা।

সোনম কাপুর: পরিশ্রম না করলে যে নিখুঁত ত্বক পাওয়া যায় না, তা বিশ্বাস করেন বলিউডের এই অভিনেত্রী। তবে কোনো ঘরোয়া টোটকা নয়, ভাল ডায়েটের ওপর নির্ভর করে চলেন এই তারকা। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই গরম পানিতে লেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে খান। এতে শরীরের টক্সিন বেরিয়ে যায় এবং ত্বকের জেল্লাও বাড়ে। তাছাড়া ক্লিনজিং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিংয়ের রুটিন মেনে চলেন সোনম।

কৃতি শ্যানন: এমনিতেই সুন্দরী তিনি। তবে শরীরের অবহেলা করেন না কৃতি। বাড়ির তৈরি হালকা খাবার খেতে ভালোবাসেন। নিয়মিত ব্যায়াম করেন। এছাড়া ক্লিনজিং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিংয়ের রুটিন চোখ বন্ধ করে মেনে চলেন। বাড়ি ফিরতে দেরি হলেও, তিনি ঘুমানোর আগে মুখ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে বিছানায় যান।

আলিয়া ভাট: খুব বেশি রূপচর্চা করতে পছন্দ করেন না। সুন্দর ত্বক পাওয়ার জন্য ডায়েট, যোগ ব্যায়ামেই ভরসা করেন বেশি। তবে রোজ নিয়ম করে তুলসীপাতা ও নিমপাতা বাটার ফেসপ্যাক মুখে মেখে ১৫ মিনিট রাখেন তিনি।

ক্যাটরিনা কাইফ: সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এ নায়িকাকে তুলসি ভেজানো পানি পান করতে দেখা যায়। এরপরই জানা যায় তুলসি পানিতেই স্লিম রয়েছেন এ নায়িকা। ক্যাটরিনাও জানান, তার ওজন নিয়ন্ত্রণে তুলসি পানির ভূমিকার রয়েছে। নারিকেল প্রাকৃতিক ময়েশ্চার হিসেবে কাজ করে। এটি সারাদিন ত্বকে আর্দ্রতা ও পুষ্টি ধরে রাখে।

সরষের তেলে রয়েছে অয়েলিক ও লিনোলিক অ্যাসিড যা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। এটি শরীরকে চাঙা করে তোলে ও ত্বকের দীপ্তি বাড়ায়। অ্যান্টি-ফাঙ্গাল হওয়ায় এটি ত্বককে চর্মরোগ হওয়া থেকে বাঁচায়। ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। গোসলের আগে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ত্বকে যে কোনো তেল মেখে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন।

এছাড়া অলিভ অয়েল ও কয়েক ফোঁটা নারিকেল তেলের সঙ্গে এক চামচ চিনি মিশিয়ে স্ক্রাব করুন। সরষের তেল ও সামান্য লবণের স্ক্রাব ত্বকের মরা চামড়া দূর করে ত্বক মসৃণ রাখে।   চন্দনগুঁড়া, দুধের সর, যে কোনো তেল আধা চা চামচ আর সামান্য হলুদ একসঙ্গে মিশিয়ে মুখ ও ঘাড়ে লাগান। ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক হবে উজ্জ্বল আর সঙ্গে আসবে মসৃণতা। এক চিমটে জাফরান,কাঁচা দুধে মিশিয়ে মুখে লাগান প্রত্যেকদিন। পনেরো দিন পরে নিজেই পরখ করতে পারবেন নিজের ত্বকের উজ্জ্বলতা।

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা ব্যস্ত থাকি তবে ত্বক সুন্দর রাখতে এই ব্যস্ততার মধ্যেও কিছুটা সময় ত্বকের জন্য ছাড়তে হবে। শীতকালে ত্বকের যত্নে আপনাকে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও মনোযোগী হতে হবে। শীতের শাকসবজি ও ফল সুন্দর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য বিশেষ প্রয়োজন। শিম, বরবটি, নানারকম শাক, মটরশুঁটি, ফুলকপি, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *