রাজশাহী নগরীর শিরোইল থেকে বাসস্ট্যান্ড সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। শিরোইল থেকে সবকিছু নিয়ে যাওয়া হবে নওদাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে। এ লক্ষ্যে কাজও শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যানজট মুক্ত রাখতে মালিক ও শ্রমিক পক্ষ থেকে সব গাড়ি নওদাপাড়ায় স্থানান্তর করা হবে। সেখান থেকে সকল রোডে ছেড়ে যাবে বিভিন্ন রুটের গাড়ি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দুরপাল্লাসহ স্থানীয় সকল রোডের গাড়ি নওদাপাড়া থেকে ছেড়ে যাবে। বাসগুলো নওদাপাড়া গোলচত্বর পদ্মা আবাসিক লেক হয়ে ভদ্রা দিয়ে চলে যাবে। নওদাপাড়া থেকে ভদ্রা পর্যন্ত চারলেনের কাজ শেষ হলে বাসগুলো চলাচল শুরু হবে। তবে কবে শুরু হবে বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়নি।
জানা যায়, ২০০৪ সালের জুন মাসে নগরীর উপকণ্ঠে ৭ দশমিক ৪১ একর জায়গার ওপর সাড়ে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয় নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল। ২০১১ সালের জুন মাসে পরিবহন মালিকদের কাছে টার্মিনালটি হস্তান্তর করে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)। উদ্দেশ্য ছিল, নগরীর মূল কেন্দ্রে অবস্থিত শিরোইল বাস টার্মিনাল সরিয়ে শহরের বাইরে স্থাপন করা। যাতে করে শহরের যানজট ও দুর্ঘটনা কমে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১৩ বছর পরও সেই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়নি। এখনও শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকেই বাস চলাচল করছে। শুধু শিরোইল বাস টার্মিনালই না, যাত্রী ওঠানোর টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে নগরীর মূল পয়েন্ট রেলগেট ও ভদ্রা মোড়। ফলে হরহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা, তৈরি হচ্ছে যানজট।
পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নওদাপাড়া আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস চলাচল করে। শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকার কোচ ও আন্তঃজেলা উপজেলা বাস চলাচল করে। আগে শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস চলাচল করতো। কিন্তু যানজট ও দুর্ঘটনা কমানোর লক্ষ্যে শহর থেকে সরিয়ে বাস টার্মিনাল নওদাপাড়ায় স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু তারপরও আন্তঃজেলা ও ঢাকার কোচগুলো শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়। আর আন্তঃজেলার বাসগুলো নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল থেকে ছাড়া হলেও যাত্রী ওঠানো হয় ভদ্রা মোড় ও রেলগেট এলাকায়।
ভদ্রা মোড়ে যাত্রী উঠিয়ে সেই বাস আবার তালাইমারীর মতো গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠায়। তারপর নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট রুয়েট, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিনোদপুর দিয়ে দেশের রংপুর, খুলনা, বরিশাল ও পাবনার দিকে বাস যায়। আর রেলগেট থেকে যাত্রী উঠিয়ে নগর ভবন, বর্ণালী, বন্ধগেট, বহরমপুর, ডিঙ্গাডোবাসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিয়ে চলাচল করে। শহরের এইসব জনবহুল ও ব্যস্ততম সড়কে, যেখানে নানা ধরনের ছোট ছোট যানবাহন চলে, সেই সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় ছোট-বড় দুর্ঘটনা লেগেই থাকে।