রোনালদোর সংগ্রহে কোটি কোটি টাকার ঘড়ি

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিলাসী জীবন সম্পর্কে কমবেশি সবাই জানেন। পর্তুগিজ সুপারস্টারের গ্যারেজ ভর্তি সুপার কার। ব্যবহারের জন্য রয়েছে ব্যক্তিগত বিমান। পাঁচ ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকার সংগ্রহে থাকা ঘড়িগুলোর বাজারদর জানলেও পাঠকের চোখ কপালে উঠতে পারে। বৃটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল জানিয়েছে, রোনালদোর কালেকশনে প্রায় ৬৬ কোটি টাকার ঘড়ি রয়েছে।

ব্যক্তি জীবনে খুব ফিটফাট ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। মাঠের বাইরে পর্তুগিজ সুপারস্টারের ঘড়িহীন হাত খুব কমই নজরে পড়েছে। ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে রোনালদোর ব্যবহৃত মহামূল্যবান সব ঘড়ির নাম উঠে এসেছে। গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, রোনালদোর সংগ্রহে ৫ মিলিয়ন পাউন্ড সমমূল্যের ঘড়ি রয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় যা ৬৫ কোটি ৪৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ৭২৬ টাকার সমান। চলুন জানা যাক রোনালদোর সংগ্রহে থাকা কিছু মূল্যবান হাতঘড়ির নাম ও দাম।

বি জ্যাকব অ্যান্ড কো. গ্র্যান্ড ব্যাগুয়েট : ২০১৩ সালে ‘ফাইভ টাইম জোন’ সম্বলিত এই ঘড়িটি প্রথমবার ব্যবহার শুরু করেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ঘড়ি ব্যবহারকারীর অবস্থানসহ নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলস, টোকিও এবং প্যারিসের সময় নির্দেশ করে পাঁচটি টাইম জোন। নেভি লেদার ব্যান্ডসহ সাদা স্বর্ণের ঘড়িটিতে ১৩.২ ক্যারেটের ৩৬০টি হীরা লাগানো আছে। রোনালদোর ঘড়িটিসহ বিশ্বে মাত্র ৬টি গ্র্যান্ড ব্যাগুয়েট হাতঘড়ি রয়েছে। যার একেকটির বাজারমূল্য ৮ লক্ষ পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা।

রোলেক্স জিএমটি-মাস্টার ২: ২০১৯ সালে রোলেক্সের সাদা সোনা দিয়ে বানানো ‘জিএমটি-মাস্টার ২’ ঘড়ি নিয়ে ক্যামেরাবন্দি হন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। রোলেক্স মডেলের সবসময়ের অন্যতম সেরা এবং সবচেয়ে বেশি দামী ঘড়ি এটি। ঘড়িটি ১৮ ক্যারেট সাদা স্বর্ণে মোড়ানো। ঘড়ির প্রায় প্রতিটি ইঞ্চি ৩০ ক্যারেটের ব্যাগুয়েট হীরা দ্বারা আবৃত। ঘড়িটি প্রস্তুত করার সময় প্রায় চার লক্ষ পাউন্ড খরচ (৫ কোটি টাকার বেশি) হয়েছিল। রোলেক্স কোম্পানি জানিয়েছে, জিএমটি-মাস্টার ২ মডেলের ঘড়িটি বর্তমানে খুবই বিরল। আর এর বর্তমান বাজারমূল্য ৬ লক্ষ ৫০ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৮ কোটি ৫০ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকার বেশি।

এমপি-০৯ টুরবিলন বি-অ্যাক্সিস কিং গোল্ড: হাবলটের মাস্টারপিস ঘড়িটির বাজারমূল্য ৮ লক্ষ পাউন্ড। নকশাকৃত ঘড়িটি কালো ব্যান্ড দিয়ে বাঁধাই করা। আর টাইমপিসের চারপাশে হীরা দিয়ে আবৃত। টাইমবোর্ডে রুপালি এবং ব্রোঞ্জ রং রয়েছে। টাইমপিস এবং ফিতার মাঝেই টিয়ারড্রপ রয়েছে।

ফ্র্যাঙ্ক মুলার ভ্যান ক্লিফ অ্যান্ড আরপেলস : ২০১৯ সালে ফ্র্যাঙ্ক মুলার ভ্যান ক্লিফ অ্যান্ড আরপেলস ইনভিজিবল ব্যাগুয়েট ডায়মন্ড ইম্পেরিয়াল টুরবিলনের ঘড়ি পরে ক্যামেরাবন্দি হয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ঘড়িটির টাইমপিসে ৪৭৪টি ব্যাগুয়েট হীরা সেট করা আছে। টাইমপিসের নিচের অংশে গোলাকার নকশায় এবং ফিতায় মোট ৭০টি চুনি বাঁধাই করা আছে। রোনালদোর এই মাস্টারপিস ঘড়িটির বাজারমূল্য ১৬ লক্ষ ১৬ হাজার ৩৪০ পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১৮ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা।

বুগাটি চিরন টুরবিলন সিআরসেভেন এডিশন : ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সুপার কার কালেকশনে রয়েছে বুগাটি চিরন। শক্তিশালী ইঞ্জিন এবং অত্যাধুনিক গাড়িটির বর্তমান বাজারমূল্য ২.৯ মিলিয়ন পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩০ কোটি ৬৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। গত বছর নিজের গাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে বুগাটি চিরন টুরবিলন ঘড়ি ক্রয় করেন রোনালদো। পর্তুগিজ সুপারস্টারের জন্য বানানো স্পেশাল এডিশন ঘড়িটির বাজারমূল্য ৭ লক্ষ ৫৭ হাজার পাউন্ড। ২০২২ সালের সর্বোচ্চ মূল্য দিয়ে কেনা ঘড়ি সেটি। ঘড়িটির দৈর্ঘ্য ২০ মিলিমিটার এবং প্রস্থ ৫৫ মিলিমিটার। এতে ২৩২টি সাদা ব্যাগুয়েট হীরা বসানো আছে। ১০৯টি মহামূল্যবান নীলকান্তমণি রয়েছে। ঘড়িটিতে মোট ২১ ক্যারেটের রতত্ন পাথর বসানো আছে।

রোলেক্স ডেটোনা : হলদে স্বর্ণের তৈরি রোলেক্স মডেলের ঘড়ির বাজারদর ৬ লক্ষ পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় আট কোটি টাকা। টাইমপিসের চারদিকে রংধনু কয়েকটি রংয়ের রতত্ন পাথর বসানো আছে।

জ্যাকব এবং কো. এপি এক্স ‘ফ্লাইট অব সিআর৭’ : ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সংগ্রহে থাকা সর্বনিম্ন মূলের ঘড়ি এটি। যার বাজারমূল্য ৪৫ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। ডেইলি মেইল জানিয়েছে, বিশ্বে মাত্র ১০০ পিস ফ্লাইট অব সিআর৭ ঘড়িটি রয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে সংবাদসম্মেলনে এই ঘড়িটি পরে ক্যামেরাবন্দি হন রোনালদো। সূত্র: নয়া দিগন্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *