রাবির হলে আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ ছাত্র উপদেষ্টা

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক নির্যাতনের শিকার এক আবাসিক ছাত্রীকে হলে তুলে দিতে গিয়ে ভিতরে আটকা পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর। সংগীত বিভাগের সভাপতিকে হেয় করার অভিযোগ তুলে একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। এতে হলে থাকা ছাত্র উপদেষ্টাসহ প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
বুধবার (১ মার্চ) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে এ ঘটনা ঘটে। এসময় সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সংগীত ও চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীর হাতে লাঞ্চনার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদিক। হল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুর দেড়টায় ভুক্তভোগী ছাত্রীকে নিয়ে হলে প্রবেশ করেন ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর।
এসময় সংগীত বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক শায়লা তাসমীনের সঙ্গে ছাত্র উপদেষ্টার বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে সংগীত বিভাগের সভাপতি রিকশা নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এর পরে সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রশাসন বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
এ বিষয়ে সংগীত বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক শায়লা তাসমীন বলেন, ‘এক ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের ঘটনায় আমার বিভাগের এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমি ছাত্র উপদেষ্টাকে ফোন দিই। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। পরে জানতে পারি তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে আছেন। তখন এ বিষয় তার সঙ্গে কথা বলার জন্য হলে যাই। সেখানে তিনি আমার শিক্ষার্থীদের সামনে আমাকে অপমানজনক কথা বলেন। একপর্যায়ে বলেন ‘হু আর ইউ’। এতে আমি অপমানিত বোধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। ’
এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এর আগে, গতকাল শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে কাজী সুমাইয়া আক্তার নামের এক ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে সঙ্গীত বিভাগের ছাত্রী নুরুন্নাহার দোলন ও হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্মৃতি রায়ের বিরুদ্ধে। পরে ওই শিক্ষার্থীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ওইদিন রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর তার কার্যালয়ে পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম খানকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি দেন। তদন্ত কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা হলের গৃহ শিক্ষক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মণিকৃষ্ণ মহন্ত এবং সহকারী প্রক্টর ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইকা কবীর নিতু।
আজ বুধবার দুপুরে নির্যাতনের শিকার কাজী সুমাইয়া আক্তারকে হাসপাতাল থেকে এনে হলে তুলে দিতে গিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীদের দ্বারা অবরুদ্ধ হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *