গ্যালারি জুড়ে ‘রোনালদো-রোনালদো’ ধ্বনি। ২৫ হাজার দর্শকের চিৎকারে মোহনীয় এক পরিবেশ। মাঠে আলোর ঝলকানি। এমন সংবর্ধনা পাবেন, হয়তো ভাবতে পারেননি রোনালদোও। সৌদি ক্লাব আল নাসের রীতিমত রাজা বানিয়ে বরণ করে নিলো বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকাকে।
মঙ্গলবার স্পেনের মাদ্রিদ থেকে রিয়াদের কিং খালেদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন রোনালদো। এরপর বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় আল নাসেরের হোম ভেন্যু এম রাসুল স্টেডিয়ামে হাজির হন পর্তুগিজ সুপারস্টার। যেখানে একটি চুক্তিপত্রে সই করেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকা। তারপরই প্রায় ২৫ হাজার দর্শকের সামনে রোনালদোকে পরিচয় করিয়ে দেয় আল নাসের।
স্টেডিয়ামে রোনালদোকে বরণ করতে আসা সমর্থকরা রীতিমত উম্মাতাল হয়ে পড়েন, রোনালদোও তাদের কাছে ছুটে যান। ছোট্ট একটি মেয়েকে নিজে গিয়ে বল দিয়ে আসার সঙ্গে বেশ কিছু বলে লাথি মেরে গ্যালারিতে পাঠিয়ে দর্শকদের সঙ্গে সময়টা উপভোগ্য করে তোলেন পর্তুগিজ ফুটবল সুপারস্টার।
সবার ছোট্ট সন্তান ছাড়া রোনালদোর পরিবারের সবাই আসেন মাঠের মাঝের মঞ্চে। জবাব দেন দর্শকদের অভিবাদনের। রোনালদোর গার্লফ্রেন্ড জর্জিনা রদ্রিগেজ ঐতিহ্যবাহী আবায়া পরে ছিলেন, রক্ষণশীল সৌদি নারীদের সাধারণত যে পোশাকে দেখা যায়।
সিআরসেভেনকে আল নাসেরের জার্সি গায়ে রাজার মতো বরণ করে নেওয়া হয়। সবাই যেভাবে সংবর্ধনায় অংশ নিয়েছেন, রোনালদোকে ভালোবাসা জানিয়েছেন, দেখে অভিভূত হয়ে পড়েন পর্তুগিজ যুবরাজ।
গণমাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, ‘ইউরোপের ফুটবলে আমার কাজ শেষ। এবার এশিয়ার ফুটবলের জন্য কিছু করতে চাই। গোলার্ধের এই প্রান্তে ফুটবল অনেক এগিয়েছে। শুধু পুরুষদের ফুটবল নয়, মহিলা ফুটবলের জন্য অনেক কাজ হচ্ছে। সেই কাজের সঙ্গে আমিও এগোতে চাই।’
রোনালদো বলেন, ‘আমি একজন অনন্য খেলোয়াড়। এখানে আসা আমার জন্য দারুণ কিছু। সেখানে (ইউরোপে) আমি সব রেকর্ড ভেঙেছি, এখানেও কিছু রেকর্ড ভাঙতে চাই। আমি এখানে জিততে এসেছি, এসেছি খেলতে এবং উপভোগ করতে। আমি এই দেশের সাফল্য এবং সংস্কৃতির অংশ হতে চাই।’
ইউরোপ ছেড়ে সৌদি আরবে আসায় অনেকে কটাক্ষ করেছেন সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকাকে। সেই নিন্দুকদের একহাত নিয়েছেন পর্তুগিজ তারকা।
তিনি বলেন, ‘যারা কটাক্ষ করে তারা ফুটবলের কিছু বোঝে না। শুধু এশিয়া নয়, আফ্রিকার ফুটবল অনেক বদলে গিয়েছে। সেটা এবারের বিশ্বকাপ দেখলেই বোঝা যায়। গত ১০-১৫ বছরে ফুটবল অনেক বদলে গিয়েছে। এশিয়ার দলগুলো এবারের বিশ্বকাপে যথেষ্ট ভালো ফল করেছে। আমার মতে ফুটবলের বিশ্বায়ন হয়েছে। আমি জানি সৌদি আরবের লিগ বেশ কঠিন। কোচ চাইলে আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মাঠে নেমে যেতে পারি।’
ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে রোনালদোর দ্বিতীয় জীবনটা খুব সুখের ছিল না। অনেক ম্যাচেই তাকে সাইডলাইনে থাকতে হয়েছে। এরপর এক টিভি ইন্টারভিউয়ে বেফাঁস মন্তব্যের জেরে ছাড়তে হয়েছে ক্লাবও। নয়বারের সৌদি চ্যাম্পিয়ন আল নাসের সেই সুযোগটি লুফে নিতে দেরি করেনি, রেকর্ড পারিশ্রমিকে রোনালদোকে নিয়ে এসেছে নিজেদের ডেরায়।