নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ (১৭) হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল মোট ছয়জন। এর মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দুজনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এদিকে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ছাত্রের কিশোরী প্রেমিকাকে রাজশাহীর সেফ কাস্টডিতে পাঠানো হয়েছে। আর কিশোরীর বাবা, ভাই ও খালাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
শুক্রবার বিকালে বাগাতিপাড়া থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোস্তফা কামাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এসআই মোস্তফা কামাল জানান, গত ২৮ আগস্ট (রবিবার) সকালে বাগাতিপাড়া বিল থেকে পীরগঞ্জ সাধুপাড়া স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী উপজেলার কাকফো এলাকার রাশুর ছেলে জাহিদুল ইসলাম জাহিদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত পড়তে দেখা যায়। দীর্ঘ তিন বছর ওই কিশোরীর সঙ্গে তার প্রেম ছিল।
তিনি জানান, রবিবার রাতেই নিহতের মা জাহেদা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এরপর নিহতের প্রেমিকা নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরীকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন দুপুরে তাকে আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে তার বয়স বিবেচনায় সেফ কাস্টডিতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, অভিযান চালিয়ে কিশোরীর কলেজপড়ুয়া ভাইকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার বাড়িতে আসে জাহিদ। তার মা তাকে বিষয়টি জানানোর পর সে তার খালাকে জানায়। এরপর ওই খালা ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে আসে। বোনের ঘরে প্রবেশ করে জাহিদকে দেখে কিলঘুষি মারতে থাকে। এরপর দুর্বল হলে ঘরে থাকা রশি দিয়ে জাহিদের গলায় ফাঁস দিয়ে টেনে ধরে। এ সময় তার মা, বাবা, খালা ও খালাতো ভাই জাহিদকে ধরে রাখে। ওই ছেলে নিস্তেজ হওয়ার পর তারা স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসককে ডাকলে তিনি জানান, মারা গেছে।
এসআই মোস্তফা কামাল আরও জানান, রাত ১২টার দিকে তারা সবাই মিলে লাশ ওই বিলে ফেলে যায়। কিশোরীর ভাইয়ের দেওয়া তথ্য মতে তাদের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এরপর কিশোরীর বাবা ও খালাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠালে আদালত ওই তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। কিশোরীর ভাই ও বাবা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।