বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে রাজশাহীর বাঘায় নির্মাণাধীন সড়কে নিম্নমাণের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। যদিও এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, এখানে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ১৬ কোটি ৬লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্যাকেজে পৃথক দুটি সড়কের পুণঃসস্কার (মেইনটেনেন্স) কাজ শুরু হয়েছে। প্যাকেজের মধ্যে উপজেলার তেথুলিয়া-দিঘা পর্যন্ত ৭ দশমিক ৫৯৬ কিলোমিটার সড়ক ও চন্ডিপুর গরু হাটা থেকে আড়ানি রেলগেট পর্যন্ত ১১ দশমিক ১ কিলোমিটার সড়ক, ২টি কালভার্ট রয়েছে। সড়কের প্রস্থ হবে ১২ফিট।
গত বছরের ১৬ জানুয়ারি কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে চলতি বছরের ৩০ মে। মেসার্স রিথীন এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ করছে বলে এলজিইডি সূত্রে জানা যায়। এদিকে,চন্ডিপুর গরু হাটা থেকে আড়ানি রেলগেট পর্যন্ত সড়কে নিম্নমানের ইট ও ইটের খোয়া ফেলে কাজ করতে গিয়ে ঢাকাচন্দ্রগাতি এলাকায় জনগনের বাঁধার মুখে পড়ে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
অভিযোগ করে এলাকাবাসী বলেন, সড়ক নির্মাণের ঠিকাদার নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ শুরু করছেন। এতে যান চলাচল শুরু হওয়ার পর সড়কটি বেশি দিন টিকবে না। ফলে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি এলাকাবাসীও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাজুবাঘা ইউনিয়নের কৃষকলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান জানান,সরকার চাইছে ‘টিকসই উন্নয়ন’। কিন্তু কাজের উন্নয়ন না হয়ে ‘অনিয়মের উন্নয়ন’ হচ্ছে।
এলজিইডির কিছু অসৎ কর্মকর্তা জড়িত থাকার কারণে ঠিকাদার এ অনিয়ম করার সুযোগ পাচ্ছে। তিনি বলেন,নির্মাণ কাজ শেষ হলে এই সড়কের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাবে। তাই আমরা চাই ভালো কাজ হোক। কাজের বিস্তারিত বিবরন দিয়ে সাইনবোর্ড দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সেটি করা হয়নি। সরেজমিন ওই সড়কে গিয়ে কোন সাইনবোর্ড পাওয়া যায়নি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিথীন এন্টারপ্রাইজের মামুন হোসেন জানান, সড়কের ওপর বালি ফেলার কাজ শেষে ইটের খোয়া ফেলা হচ্ছে। এই ইটের খোয়া নিম্নমাণের বিষয়ে জানতে চাইলে মামুন হোসেন বলেন, এই সড়কের পুরনো ইট টেন্ডারে ধরা ছিল। সেগুলো খারাপ হতে পারে। এ ছাড়া নতুন ১ নম্বর ইট ভেঙে কাজ করা হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু ২ নম্বর ইট যেতে পারে। তবে এজিং এর কাজে খারাপ ইট ব্যবহারের সত্যতা স্বীকার মামুন হোসেন বলেন,ব্যবহৃত ইটগুলো তুলে ফেলা হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী নুরল ইসলাম বলেন, এই কাজে ঠিকাদারের নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। তবে ১নম্বর ১০০শ ইটের মধ্যে ৪/৫টা খারাপ ইট থাকতে পারে। যেহেতু নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে বিষয়টি আমি গুরুত্বের সাথে দেখব এবং ঠিকাদারকে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার সুযোগ দেওয়া হবেনা।
সাইন বোর্ড দেওয়ার নিয়ম আছে- এর সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা প্রকৌশলী নুরল ইসলাম বলেন,ঠিকাদারকে বলে তারও ব্যবস্থা করা হবে। বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দীন লাভলু বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঠিকাদার, ইঞ্জিনিয়ারসহ কাজের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টদের মান সম্পন্ন কাজ করার জন্য বলেছি।