অপু বিশ্বাস। দেড় যুগ ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। একটা সময় ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষনায়িকা হিসেবে তুমুল ব্যস্ত সময় পার করেছেন। মাঝে কিছুটা বিরতি দিয়ে এখন আবারও সিনেমায় নিয়মিত হয়েছেন। এবার তাঁকে দর্শক দেখতে পাবে নির্মাতা হিসেবে। সরকারি অনুদান পেয়ে নির্মাণ করছেন ‘লাল শাড়ি’। সিনেমা নিয়ে তাঁর বলা কথা তুলে ধরা হলো-
এবার প্রযোজক, লাল শাড়িতে কখন দেখবে দর্শক?
হ্যাঁ, প্রযোজক হিসেবে আমার সিনেমা ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংস এটি বলতে পারেন। ইতোমধ্যেই নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। সিনেমাটির জন্য সরকারি অনুদান পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। এ বছরের শেষদিকে বা আগামী বছরের শুরুতে দর্শক আমাকে লাল শাড়িতে দেখতে পাবেন বলে আশা করছি।
সরকারি অনুদান প্রাপ্তির অনুভূতি কেমন?
আমি বলব আমার জন্য এটি ‘নিউ জার্নি, নিউ লাইফ’, সবার কাছে দোয়া চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলা চলচ্চিত্রের পাশে থাকার জন্য। আশা করি, সব সময় বাংলা চলচ্চিত্রের পাশে এভাবেই আপনাকে পাশে পাব। জয় হোক বাংলা চলচ্চিত্রের।
ছবির শিরোনাম লাল শাড়ি কেন?
হুম, লালটা আসলে সব কিছুর সঙ্গেই মানায়। ধরেন বিয়ে করতে গেলে লাল শাড়ি পরে, প্রপোজ করতে গেলেও পরে। যেমন আমি প্রপোজ করতে গিয়ে লাল শাড়ি পরেছিলাম। আবার মেয়েরা যখন মা হয়, তখনো কিন্তু লাল শাড়ি পরে। বেবি শাওয়ারের সময়ও মা আমাকে লাল শাড়ি পরিয়ে দিয়েছিলেন। আর এই সিনেমার নাম কেন লাল শাড়ি, তার আরও কারণ আছে, সবই বড় পর্দায় দেখা যাবে।
সিনেমাটিতে আপনাকে দেখা যাবে?
জি, আমি নিজেও এতে অভিনয় করব। আমি দীর্ঘ সময় ধরে সিনেমায় অভিনয় করছি। অভিনয়ে নিজের জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। যেহেতু লাল শাড়ির শুরু থেকে আজ অবধি সবকিছুই আমার জানাশোনা, তাই এ সিনেমার গল্পের কেন্দ্রীয় একটি চরিত্রে আমিই অভিনয় করতে যাচ্ছি।
এ সিনেমা নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
একজন শিল্পী হিসেবে ভালো গল্পের ভালো চরিত্রে কাজ করার প্রবল স্পৃহা সব সময়ই থাকে। লাল শাড়ির গল্পটা এত চমৎকার যে, তা দর্শককে মুগ্ধ করবে। আর আমি যে চরিত্রটিতে অভিনয় করব সে চরিত্রটিও এক কথায় অসাধারণ। এই চরিত্রের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি। সেই প্রস্তুতিটা কেন নিয়েছি তা আসলে সিনেমাটি মুক্তির পর আমার চরিত্রটি দেখলে দর্শক তা অনুভব করতে পারবে।
সিনেমাটির ভাগ্যে জাতীয় পুরস্কার জুটতে পারে?
আসলে প্রত্যেকটা অ্যাওয়ার্ডই তো স্বীকৃতি। আমার লাল শাড়ি সিনেমার গল্পে বিনোদনের পাশাপাশি সমৃদ্ধ বাণী রয়েছে, তাই এই সিনেমা থেকে পুরস্কার পাওয়ার আশা আছে।
ওপার বাংলায় আপনার অভিনীত প্রথম ছবি ‘আজকের শর্টকাট’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে, অনুভূতি কেমন?
অনেক দিন আগে সিনেমাটিতে অভিনয় করেছিলাম। তবে মহামারি করোনার কারণে এতদিন সিনেমাটি মুক্তি পায়নি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে সিনেমাটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। সিনেমার গল্পে আমি বাংলাদেশের একজন মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। সবকিছু মিলিয়ে দারুণ একটা কিছু হবে বলে আশা করছি। আর ওপার বাংলার সিনেমায় কাজ করার অনুভূতি এক কথায় অসাধারণ।
কলকাতার পূজার প্রধান মুখ অপু বিশ্বাস, কেমন লাগছে?
এবার কলকাতার পূজার মুখ হচ্ছি আমি। দুটি পূজার প্রধান মুখ হব। একটি কাঁকুড়গাছি যুবকবৃন্দ এবং অপরটি দক্ষিণ ট্যাংরা শীতলা যুব সংঘ। বিনা পারিশ্রমিকে এ কাজ করছি। বঙ্গবন্ধুর সম্প্রীতির বার্তা দিয়েই এ কাজে রাজি হওয়া আমার। এ কাজটি করতে পেরে খ্বু ভালো লাগছে আমার।
সম্প্রতি ছবির প্রচারণায় কলকাতা ঘুরে এলেন, কেমন কাটল এ সফর?
পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে ঘুরেছি শান্তিনিকেতনে। সেখান থেকে বেশ কিছু খাদি শাড়ি কিনেছি নিজের জন্য। সেখানকার হ্যান্ডমেড ব্যাগ এবং জুয়েলারিও কিনলাম। পূজায় নিজের এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জন্য অনেক গিফট কিনেছি। ছবির প্রচারণায় নানা জায়গায় গিয়েছি। সবমিলিয়ে দারুণ সময় কাটালাম।
কেমন পোশাকে সাজবেন এবার?
পূজার চার দিন নিজেকে চার রকমভাবে দেখতে চাই। শাড়ি নয়, চার রকম পোশাকে সাজব আমি। ওয়্যার হিসেবে পছন্দ ব্যাগি টি-শার্ট এবং ট্রাউজার্স। সঙ্গে স্লিপার্স। কারণ হালকা মেকআপের সঙ্গে হালকা পোশাকেই বেশি কমফোর্টেবল আমি।
এবারের পূজায় দুই বাংলার বড় পর্দায় আসছেন, কেমন লাগছে?
আসলে আমি খুবই ভাগ্যবতী। দুর্গাপূজার মতো একটি প্রধান ধর্মীয় উৎসবে দুই বাংলার বড় পর্দায় আসছি আমি। এপারে আমার অভিনীত ‘ঈশা খাঁ’ শিরোনামের সিনেমাটি আসছে আর ওপারে তো ‘আজকের শর্টকাট’ সিনেমাটি আসছেই। এটি আমার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের জন্য ডাবল ধামাকা বলতে পারি। এ নিয়ে অসাধারণ ভালো লাগা কাজ করছে আমার মধ্যে।