পিছিয়ে পড়েও লিভারপুলকে গোলবন্যায় ভাসালো রিয়াল

শুরুতেই রিয়াল মাদ্রিদ পিছিয়ে পড়েছিলো ২-০ গোলে। এমিরেটস স্টেডিয়ামে তখন উল্লাসের ঝড়। এইবার বুঝি রিয়ালের বিপক্ষে প্রতিশোধটা নেয়া হবে! মাত্র ১৪ মিনিটে ২-০ গোলে এগিয়ে গেলে ম্যাচের ফল কী হতে পারে, অগ্রিম সেটা ভেবে এমিরেটসের দর্শকরা সুখ স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলো।

অন্যদিকে, ১৪ মিনিটের মাথায় ২ গোল হজম করে যেন নড়েচড়ে উঠলো রিয়াল মাদ্রিদ। আড়মোড়া ভেঙে যখন তারা প্রতিপক্ষের ওপর প্রবল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লো, তখন লিভারপুল উড়ে গেলো খড়কুটোর মতো। প্রথমার্ধেই সমতায় দল এবং ৬৭ মিনিটেই লিভারপুলের জালে ৫ বার বল জড়িয়ে দিলো ভিনিসিয়ুস আর করিম বেনজেমারা।

৯০ মিনিটের খেলা শেষে ফল, লিভারপুল ২ : ৫ রিয়াল মাদ্রিদ। এমিরেটসেই লিভারপুলকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে বলতে গেলে এক পা দিয়ে রাখলো রিয়াল মাদ্রিদ। জোড়া গোল করেছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র এবং করিম বেনজেমা। এডার মিলিতাও করেছেন রিয়ালের হয়ে বাকি গোলটি।

লিভারপুলের প্রত্যাশা ছিল প্রতিশোধের। গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লিভারপুলকে হারিয়েই শিরোপা জিতেছিলো লজ ব্লাঙ্কোজরা। এর আগে ২০১৮ সালেও ফাইনালে রিয়ালের কাছে হেরেছিলো অলরেডরা। ২০২০-২১ মৌসুমের শেষ ষোলো থেকেও রিয়ালের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিলো লিভারপুলকে।

এবার সে হিসেবেই শুরু করেছিলো লিভারপুল। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই রিয়ালকে স্তব্দ করে দিয়ে দুর্দান্ত এক ফ্লিকে গোল করে বসেন ডারউইন নুনেজ। মাত্র ১০ মিনিট পরই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় অলরেডরা। গোলরক্ষক থিবো কুর্তোয়ার হাস্যকর ভুলে খুব কাছ থেকে গোল করেন মোহাম্মদ সালাহ।

প্রধমার্ধেই সফকারীরা সমতায় ফিরে আসে। ২১তম মিনিটে বক্সের একেবারে সামনে থেকে নিচু শটে লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারকে পরাস্ত করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ৩৬তম মিনিটে ভুল করে বসেন লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন। ব্যাকপাস দিতে গিয়ে বল চলে যায় ভিনিসিয়ুসের কাছে। বলটা পেয়েই অ্যালিসনের মাথার ওপর দিয়ে লিভারপুলের জালে বল পাঠিয়ে দেন রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার পর আরও দুর্দান্ত হয়ে ‍ওঠে রিয়াল। শুরুতেই (৪৭তম মিনিটে) গোল করে বসেন এডার মিলিতাও। ৫৫তম মিনিটে ৪-২ ব্যবধান করে ফেলেন করিম বেনজেমা। এবং এই ব্যবধানটা ৫-২ হয়ে যায় ৬৭তম মিনিটে। এবার গোলদাতা করিম বেনজেমা। ভিনিসিয়ুসের কাছ থেকে বল পেয়ে বাম পাশের উপরের কোনা দিয়ে বল জড়িয়ে দেন লিভারপুলের জালে।

ম্যাচের পর করিম বেনজেমা বলেন, ‘আমরা এই জয়টি উৎসর্গ করছি আমাদের অনারারি ক্লাব প্রেসিডেন্ট আমানসিও আমারোকে (মঙ্গলবারই যিনি মৃত্যুবরণ করেছেন)। এই জয়টা তার জন্য। আমরা ব্যক্তিত্ব দেখিয়েছি, গোল করেছি। আমরা এই চ্যাম্পিয়ন্স লিগটা জিততে চাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘এটা ছিল দারুণ একটি ম্যাচ। শুরুটা ভালো করতে পারিনি। ম্যাচের ১৫ মিনিট পর আসল রিয়াল মাদ্রিদকে দেখা গেছে। ফুটবল সব সময়ই কঠিন। তারা আমাদের চেয়ে ভালো শুরু করেছিলো। সমর্থকদের তুমুল সমর্থনও ছিলো তাদের সঙ্গে। আমরা জানতাম, অনেক কিছু করার বাকি আছে এবং আমরা শেষ পর্যন্ত তাই করে গেছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *