পিএসজি ছেড়ে সৌদি আরবের ক্লাবেই যাচ্ছেন মেসি!

বিশ্বকাপ জিতে প্যারিসে ফিরলেও পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেননি লিওনেল মেসি। চুক্তি নবায়ন আদৌ হবে কিনা; তা নিয়েই দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।   শোনা যাচ্ছে, ফরাসি জায়ান্টদের ছাড়তে চান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। তার পরবর্তী ঠিকানা হতে যাচ্ছে সৌদি আরবের এক ক্লাব। কয়েকটি সূত্র ধরে এমনটাই দাবি করেছে ‘ফোর্বস‘।  

বার্সেলোনার সঙ্গে বহু বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে ২০২১ সালে পিএসজিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন মেসি। আর্থিক সংকটের কারণে তার বিশাল বেতনের বোঝা বহন করতে না পারায় কাতালান জায়ান্টরা যাকে ধরে রাখতে পারেনি; সেই মেসিকে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে পেয়ে লুফে নেয় পিএসজি। দুই বছরের চুক্তি স্বাক্ষর হয় দুই পক্ষের মধ্যে। তবে আগামী জুনের ৩০ তারিখে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের উৎসব করার পর সবাই ধরেই নিয়েছিল, পিএসজিতেই থেকে যাবেন মেসি। এমনকি প্যারিসিয়ানদের পক্ষ থেকেও শিগগিরই নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এখন আর কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়। বার্সেলোনা-বিশেষজ্ঞ জেরার্দ রোমেরোর জানিয়েছেন, পিএসজিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন সাতবারের ব্যালন ডি’রজয়ী। রোমেরোর দাবি, ফ্রান্স তো বটেই, ইউরোপের ফুটবলকেই বিদায় বলতে যাচ্ছেন মেসি।

কিছুদিন আগে ‘মুন্দো দেপোর্তিভো’ মেসির দলবদল ঘিরে বিস্ফোরক খবর প্রকাশ করেছিল। তাদের দাবি ছিল, সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল মেসিকে কেনার জন্য বিশাল অঙ্কের (বছরে ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রস্তাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমনটা সত্যি হলে মেসি হতেন ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ফুটবলার। এমনকি তিনি ছাড়িয়ে যেতেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকেও; যিনি আল হিলালের প্রতিদ্বন্দ্বী আল নাসেরের সঙ্গে বছরে ২১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।

এদিকে মেসির পিএসজি ছাড়তে চাওয়ার কারণ হিসেবে সামনে আসছে কয়েকটি বিষয়। এর মধ্যে একটি অবশ্যই কিলিয়ান এমবাপ্পে। গত বিশ্বকাপের ফাইনালে দুই সতীর্থের মুখোমুখি লড়াইয়ের পর সম্পর্ক তিক্ততায় গড়ায়। বিশেষ করে হ্যাটট্রিক করেও ফ্রান্সকে শিরোপা জেতাতে না পারায় হতাশা তো আছেই, সমস্যাটা আরও বড় হয় আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেসের অশ্লীল ইঙ্গিত। এর বাইরে নেইমারকে তাড়াতে এমবাপ্পের প্রচেষ্টা তো আছেই। প্রিয় বন্ধুকে কাছছাড়া করতে চাইবেন মেসি। এছাড়া আরও আছে মেসির প্রতি ফরাসি সমর্থকদের ক্ষোভ।

মেসির পিএসজি ছাড়তে চাওয়ার পেছনে আর্থিক ব্যাপারও জড়িয়ে আছে। ২০২২ সালে ১২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৬৫ মিলিয়ন ডলার বেতন এবং অন্যান্য খাত থেকে ৫৫ মিলিয়ন ডলার) আয় নিয়ে ‘ফোর্বস’-এর বিচারে বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা ধনী ফুটবলার হয়েছিলেন মেসি। ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে তালিকার দুইয়ে ছিলেন রোনালদো। অন্যদিকে পিএসজির সঙ্গে নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করে তালিকার শীর্ষে উঠে আসেন এমবাপ্পে। গত বছর তার আয় ছিল ১২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ফরাসি সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, মেসিকে চুক্তি নবায়নের জন্য বছরে ৩০ মিলিয়ন ইউরো বা ৩২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে পিএসজি। সেই তুলনায় আল হিলালের সম্ভাব্য প্রস্তাবে অঙ্কটা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে রোনালদোর মতো মেসিও হয়তো চাইবেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ফুটবলার হতে। ফলে তার পিএসজিতে না থাকতে চাওয়ার খবরটি সুবাতাস বইয়ে দিতে পারে আল হিলালে। তবে তাকে পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টার মায়ামি এবং বার্সেলোনা। যদিও মেসি আদৌ আর বার্সায় ফিরতে চাইবেন কিনা সন্দেহ; আর ইন্টার মায়ামির পক্ষে মেসিকে আল হিলালের মতো কোনো প্রস্তাব দেওয়া প্রায় অসম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *