বাঁচা-মরার লড়াই শ্রীলঙ্কার। সুপার টুয়েলভসে উঠতে হলে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জিততেই হতো শ্রীলঙ্কাকে। সে সঙ্গে রানরেটের দিকেও নজর রাখতে হতো তাদের। শেষ পর্যন্ত জিলংয়ের কার্দিনিয়া পার্কে ডাচদের ১৬ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করে নিয়েছে লঙ্কানরা। পয়েন্ট সমান হলেও রানরেটের ব্যবধানে নেদারল্যান্ডসকে পেছনে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা। শুধু তাই নয়, দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে নামিবিয়া জিতে গেলে নেদারল্যান্ডসই বিদায় নেবে এবারের বিশ্বকাপ থেকে। প্রথম দুই ম্যাচ টানা জয়ও কোনো কাজে আসছে না তাদের।
কার্দিনিয়া পার্কে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। জবাব দিতে নেমে নেদারল্যান্ডস ৯ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৪৬ রান। ফলে ১৬ রানের জয়ে সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করে নিলো লঙ্কানরা।
ডাচদের হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে শ্রীলঙ্কা। ৪ পয়েন্টের সাথে তাদের রান রেট এখন ০.৬৬৭। সমান পয়েন্ট হলেও নেদারল্যান্ডসের রান রেট কমে গেছে অনেক। তাদের রান রেট এখন ঋনাত্মক। -০.১৬২। ১৬ রানে হারলেও দেশটির রানরেট কমে যাওয়ার কারণ, আগের দুই ম্যাচেও জয়ের ব্যবধানটা বড় ছিল না। কিন্তু শ্রীলঙ্কা প্রথম ম্যাচে ৫৫ রানে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৭৯ রানে হারিয়েই রান রেট বাড়ানোর আসল কাজটা সেরে নিয়েছিল।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে নামিবিয়া কোনোমতে আরব আমিরাতকে হারাতে পারলেই সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত। তাতে বিদায় নেবে আরব আমিরাতের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসও। আর যদি অঘটন ঘটিয়ে আরব আমিরাত জিতে যায়, তাহলে নেদারল্যান্ডসই উঠবে সুপার টুয়েলভসে। বিদায় নেবে আরব আমিরাত এবং নামিবিয়া।
এশিয়া কাপের মতই ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছে শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপে যেমন প্রথম ম্যাচেই তারা হেরে বসেছিল আফগানিস্কানের সঙ্গে। তাও যেন-তেনভাবে নয়, একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে। অন্যদিকে এবারের বিশ্বকাপেও প্রথম ম্যাচে নামিবিয়ার বিপক্ষে ৫৫ রানে রীতিমত বিধ্বস্ত হতে হয়েছে দাসুন শানাকার দলকে। লঙ্কানরা একে মনে করছে ওয়েকআপ কল (সতর্কবার্তা)। সেই সতর্কবার্তা পেয়েই ফিনিক্স পাখির মত জেগে উঠেছে তারা। দ্বিতীয় ম্যাচে আরব আমিরাতকে বড় ব্যবধানে হারিয়েই ঘুরে দাঁড়ালো লঙ্কানরা এবং শেষ ম্যাচে ডাচদের হারিয়ে জায়গা করে নিলো সুপার টুয়েলভসে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচ শেষ হওয়ার পর বোঝা যাবে শ্রীলঙ্কা গ্রুপ সেরা নাকি দ্বিতীয়?
শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেয়া ১৬৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে শুরু করলেও ওপেনার ম্যাক্স ও’দাউদ দৃঢ়তাপূর্ণ ব্যাটিং করেন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তিনি। ৫৩ বল খেলে করেন ৭১ রান। ৬টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কা মারেন ৩টি। তার দৃঢ়তাতেই জয়ের প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল ডাচরা। ম্যাক্স ও’দাউদ দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেও ৭ রানে উইকেট হারান ভিক্রমজিৎ সিং। বাস ডি লিডি করেন ১৪ রান। কলিন অ্যাকারম্যান আউট হয়ে যান কোনো রান না করেই।
টম কুপার আউট হন ১৬ রান করে। স্কট এডওয়ার্ডস ১৫ বলে করেন ২১ রান। এরপর অবশ্য আর কোনো ব্যাটারই দুই অংকের ঘর স্পর্শ করতে পারেননি। শ্রীলঙ্কার বোলারদের মধ্যে ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা নেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। ২ উইকেট নেন মহেস থিকসানা, ১টি করে উইকেট নেন লাহিরু কুমারা এবং বিনুরা ফার্নান্দো। দু’জন হলেন রানআউট।