নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম চাল কিনতে নাভিশ্বাস, সবজি মাছে আগুন

বাজারে নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে ভুগছে ক্রেতা। মোটা চাল কিনতেই ব্যয় করতে হচ্ছে সর্বোচ্চ ৫৮ টাকা। পাশাপাশি নতুন করে না বাড়লেও সব ধরনের সবজি ও মাছের দামে যেন আগুন। গরু ও খাসির মাংস কিনতে অনেক ক্রেতারই সামর্থ্য নেই। বাজারে গুরুর মাংস প্রতিকেজি ৭০০ ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা। তাই মাংসের স্বাদ নিতে ব্রয়লার মুরগির দিকে ঝুঁকছের ক্রেতা। তবে দাম কিছুটা কমলেও এখনো কেজি ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সব মিলে নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে ভোক্তার নাভিশ্বাস বাড়ছে।

রাজধানীর কাওরানবাজার, মালিবাগ বাজার ও নয়াবাজারে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা বিক্রি হয়েছে ৫৫-৫৮ টাকা। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পণ্যমূল্য তালিকায়ও মোটা চালের কেজি সর্বোচ্চ ৫৮ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিকেজি বিআর ২৮ বিক্রি হয়েছে ৬০-৬২ টাকায়। প্রতিকেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকা। প্রতিকেজি নাজিরশাইল চাল কিনতে ক্রেতাকে মানভেদে ৭৭-৯০ টাকা গুনতে হচ্ছে।

রাজধানীতে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা। প্রতিকেজি শিম বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা, কাঁকরোল ৭০-৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, করলা ৬৫-৭০ টাকা, চিচিংগা ৭০ টাকা, শসা ৬০-৭০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পটোল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। প্রতিপিস ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা, মিষ্টিকুমড়ার ফালি ২০-৩০ টাকা, লেবুর হালি ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি রুই মাছ বিক্রি হয়ছে ৩২০-৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৮০-২০০ টাকা। প্রতিকেজি শিং মাছ ৩৫০-৪৬০ টাকা, কৈ মাছ ২০০-২৫০ টাকা, পাবদার কেজি ৩৫০-৫০০ টাকা। পাশাপাশি প্রতিকেজি চিংড়ি বিক্রি হয়েছে ৮০০-১০০০ টাকা। আর এক কেজি ওজনের বেশি ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৬০০-১৮০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতিকেজি ইলিশ ৯০০-১০০০ টাকা, ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ৭০০-৮০০ টাকা।

কাওরান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো. তানজিল হাসনাত বলেন, পণ্যের দাম এত বেশি হলে কী কিনব। সবকিছু অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খেয়ে বাঁচতে হবে তাই দাম বেশি হলেও কিনে খেতে হচ্ছে। তবে আগে যেভাবে ভালোমতো বাজার করতে পারতাম, তা এখন পারছি না। কারণ পণ্যের দাম বাড়লেও বেতন বাড়েনি। তাই নিত্যপণ্যের দর আমাদের ভোগাচ্ছে। খুব করে ভোগাচ্ছে।

এদিকে কিছুদিন আগে হঠাৎ বেড়ে যায় ডিমের দাম। রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি হালি ফার্মের ডিম কিনতে ক্রেতার ৫৫ টাকা গুনতে হয়েছে। এছাড়া পাড়ামহল্লার দোকানে ৬০ টাকাও বিক্রি হয়েছে। পরে বাজার তদারকির কারণে দাম কিছুটা কমেছে। শুক্রবার প্রতি হালি ফার্মের ডিম ৪৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা কেজি। পাশাপাশি প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭০০-৭৫০ টাকা। খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকা কেজি।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, তদারকির কারণে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম কমতে শুরু করেছে। ডিমের কারসাজির পেছনে যারা জড়িত আমরা তাদের চিহ্নিত করেছি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি চালের বাজারে অভিযান চলছে। কী কারণে ও কারা দাম বাড়িয়েছে আমরা তা বের করছি। পাশাপাশি সার্বিকভাবে নিত্যপণ্যের বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *