গাড়ি বা যানবাহন থেকে ফেলে দেওয়া ব্যবহার অযোগ্য টায়ারকে বৈজ্ঞানিক উপায়ে পুনঃব্যবহার করে কংক্রিট তৈরি করে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত তরুণ গবেষক ও প্রকৌশলী মোহাম্মদ মুমিন উল ইসলাম। মোহাম্মদ মুমিন উল ইসলাম বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম স্বনামধন্য আরএমএইটি বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়ায় পিএইচডি গবেষক হিসেবে কাজ করছেন। তার এই উদ্ভাবন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৪০০ টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংবাদ, বৈজ্ঞানিক সাময়িকী এবং বিভিন্ন মিডিয়াতে সরাসরি প্রকাশিত হয়েছে।
বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম, যেমন দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ, হেরাল্ড সান, দ্য ডেইলি মেইল, ফোর্বস, এডভোকেটস, দা এডভার্টাইজার, নিউ এটলাস , নিউক্যাসল হেরাল্ড, দ্য ক্যানবেরা টাইমস, দা টাইমস, অস্ট্রেলিয়ান এসোসিয়েটেড প্রেস, দ্য কুরিয়ার ইত্যাদি এই গবেষণা প্রকাশ করে। এখন পর্যন্ত আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, জাপান,স্পেন, জার্মানি, সুইডেন, গ্রীস, ইতালি, ব্রাজিলসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বের প্রায় ৮.৬ কোটি শ্রোতাদের আকর্ষণ করেছেএই উদ্ভাবন, যার বিজ্ঞাপন মূল্য প্রায় ৩.১ মিলিয়ন ডলারের সমান।
মোহাম্মদ মুমিন উল ইসলাম বলেন, আমার পিএইচডি গবেষণার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন পরিত্যক্ত এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ম্যাটেরিয়ালস গুলোকে কাজে লাগিয়ে সর্বোচ্চ ব্যবহার উপযোগী কংক্রিট তৈরী করা। আমি গবেষণার শুরুতে মনোযোগ দেই পরিত্যক্ত টায়ারের দিকে এবং দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর আমি একটি তত্ত্ব আবিষ্কার করতে সমর্থ হই – যা পরবর্তীতে সফল ভাবে বাস্তবায়ন করি। আমি চিরাচরিত কোর্স এগ্রেগেটেকে (ইট বা পাথরের টুকরোকে) সম্পূর্ণ রূপে পরিত্যক্ত টায়ারের রাবার দিয়ে প্রতিস্থাপন করে স্ট্রাকচারাল গ্রেড কংক্রিট তৈরী করা সম্ভব।পূর্বে অধিক পরিমানে রাবার দিয়ে কংক্রিট তৈরী করা সম্ভব হলেও তা বিল্ডিং স্ট্রাকচারাল কাজে লাগানো যেত না। আমার এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বিগত কয়েক দশকের এই সীমাবদ্ধতাকে নিয়ে কাজ করতে নতুন দিক উন্মোচন করবে আশা করি।”
গবেষক মোহাম্মদ মুমিন উল ইসলামের পৈত্রিক নিবাস বাংলাদেশের জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানার গুনারীতলা গ্রামে। দুই ভাইয়ের মাঝে মোহাম্মদ মুমিন উল ইসলাম বড় এবং তার ছোট ভাই মো. মুহাইমিন – উল – ইসলাম একজন মেরীন ইন্জিনয়ার এবং আমেরিকার সনামধন্য বিশ্ববিদ্দালয়ে পিএইচডি করছেন ফুল স্কলারশিপ নিয়ে। জনাব মোহাম্মদ মুমিন উল ইসলামের সহধর্মিণী আফসানা জেরীন নীলা কুয়েট থেকে বিএসসি ইন ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াতে পিএইচডি করছেন ফুল স্কলারশিপ নিয়ে।