জ্বালানি সাশ্রয়-বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের নির্দেশ : নসরুল হামিদ

বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সাশ্রয়ে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। একই সঙ্গে জেলা পর্যায়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের প্রথম দিনের তৃতীয় অধিবেশনে প্রতিমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। পরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বছর আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে সব উন্নয়নের পেছনে বিদ্যুৎ-জ্বালানির নিরবচ্ছিন্নতা বিরাটভাবে কাজ করে। আমি মনে করি এ বছর সবার জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে। আমাদের সেচ মৌসুম শুরু হচ্ছে। সামনে রোজার মাস (রমজান) শুরু হবে। ফলে চ্যালেঞ্জের অনেকগুলো বিষয় আছে।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মাথায় নিয়ে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। ওনাদের (ডিসি) উদ্দেশে এটাই বলা যে, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে আরেকটু সাশ্রয়ী হওয়া দরকার। জেলা পর্যায়ে সরকারি অফিসগুলোতে যে বিল পেন্ডিং (বকেয়া বিদ্যুৎ বিল) রয়েছে সেগুলোকে নিয়মিত করার জন্য বলা হয়েছে।

নসরুল হামিদ বলেন, সামনের মাস থেকে যেহেতু সেচ মৌসুম শুরু হবে, নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি যেন পেতে পারে সেজন্য স্ব-স্ব জেলার ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনরা যাতে আমাদের বিভাগের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখেন, সেই বিষয়ে বলা হয়েছে। সেখানে কমিটি করা হয়েছে। বিদ্যুতের বিষয়ে যদি কোনো চ্যালেঞ্জ থাকে, ঘাটতি থাকে- সেই বিষয়গুলো কীভাবে সুরাহা করতে পারি সেবিষয়ে তাদের সার্বিক সহযোগিতা যেন থাকে।

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেখানে যেন কোনো অসুবিধা না হয় সেই বিষয়গুলো বলা হয়েছে। জেলার পরিত্যক্ত জমি সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা যায় কি না, সেই বিষয়ে ডিসিদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, এটাও বলেছি জেলা পর্যায়ে যত সরকারি ভবন আছে, সব ছাদে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা যায় কি না সেটা বলা হয়েছে।

স্কুলগুলোতে তারা স্রেডার (টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) সহায়তায় ব্যবস্থা (সৌর বিদ্যুৎ) নিতে পারেন, যদি প্রয়োজন হয়। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে ডিসিরা জন-অসন্তোষের কোনো আশঙ্কা করছেন কি না- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, না, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বিষয়টি নিয়ে তাদের কোনো আশঙ্কা ছিল না। যে কয়েকটা বিষয় ছিল- পাথরের কোয়ারি নিয়ে, সেই বিষয়ে তো আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।

গরমের মৌসুমে গ্যাস-বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাবেন কীভাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা নিজস্ব গ্যাস কিছুটা বৃদ্ধি করেছি। আমরা স্পট থেকে কেনার জন্য ব্যবস্থা করছি। আমি মনে করি স্পটের গ্যাস আসবে। শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস দিতে স্পট থেকে (গ্যাস) নিতে যাচ্ছি। ভোলায় আবিস্কৃত নতুন কূপের গ্যাস নিয়ে আসতে দুই মাসের মতো লাগবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

বিদ্যুতের দাম ফের বাড়বে কি না- জানতে চাইলে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা তো বলেছি প্রতি মাসে একটা সমন্বয়ের জায়গায় যাবো। সেটা নির্ভর করবে জ্বালানির দামের ওপর। সেভাবেই আমরা ব্যবস্থা নেবো। গ্যাসের দাম বাড়বে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখনও বলতে পারি না, কমতেও পারে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ কার্য-অধিবেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এতে সভাপতিত্ব করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *