জ্বালানির দামের অজুহাতে চালের বাজারে নৈরাজ্য

জ্বালানি তেলের অজুহাতে বাড়ছেই পণ্যমূল্য। অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে চালের দাম। এক সপ্তাহে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

ব্যবসায়ীদের দাবি, ট্রাক ভাড়া বাড়ার কারনেই দাম বেড়েছে। তবে, ট্রাক ভাড়ার হিসাব বলছে বস্তা, প্রতি চালের পরিবহন খরচ বেড়েছে পাঁচ টাকা।

অথচ ব্যবসায়ীরা বস্তা প্রতি চালের দাম বাড়িয়েছে পাঁচশ’ টাকা। আর সেই বাড়তি দামের বোঝা এসে পড়েছে ক্রেতার ঘাড়ে, দিন শেষে কাটা পড়ছে ক্রেতার পকেটই।

জামালপুর থেকে ২০ টন চাল নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে চালের আড়তে এসেছেন ট্রাক চালক সানোয়ার হোসেন।

ডিজেলের দাম সাড়ে ৪২ শতাংশ বৃদ্ধির পরও, ১৬০ কিলোমিটার দূরত্বে থেকে ২০ টন অর্থাৎ ২০ হাজার কেজি চাল ঢাকায় এনে ট্রাক ভাড়া বাড়তি নিয়েছেন তিনি ২ হাজার টাকা। অর্থাৎ এক কেজি চালে অতিরিক্ত পরিবহন ব্যয় বাড়লো ১০ পয়সা।

কেজিতে সাত পয়সা বাড়তি পেয়েছেন ঢাকার ১৮৫ কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়ার খাজানগর থেকে রাজধানীতে ১৩ টন চাল বয়ে আনা ট্রাক চালক শিপন। ১৩ হাজার কেজি চালানে শিপন বাড়তি ভাড়া পেয়েছেন এক হাজার টাকা।

প্রতি কেজি চাল ঢাকা এসে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ ১০ পয়সা খরচ হলেও, বাজারে দাম বেড়েছে কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা। অর্থাৎ ট্রাক ভাড়ার দোহাই দিয়ে, ৫০ কেজির বস্তায় ব্যবসায়ীরা ৫০০ টাকা বাড়ালেও, আদতে জ্বালানির খরচ বেড়েছে পাঁচ টাকা।

৪২.৫০ শতাংশ ডিজেলের দাম বৃদ্ধির সমপরিমাণ ভাড়া যদি ট্রাক শ্রমিকরা আদায় করতে পারে তাহলে এক কেজি চাল ঢাকা আনতে খরচ হবে সর্বোচ্চ ২৭ পয়সা।

অর্থাৎ বর্তমানে বর্ধিত খরচের চেয়ে ১৭ পয়সা বেশি। তখন হয়তো, আরও বেশি করে ক্রেতার পকেট কাটার সুযোগ পাবেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর এই ফাঁদে ফেলে এখন প্রতিদিনই হু হু করে বাড়ছে মোটা, সরু সব ধরনের চালের দাম। মানভেদে প্রতি কেজি চালের দাম পাইকারিতে ৩ থেকে ৪ টাকা এবং খুচরা বাজারে পাঁচ থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা৷ নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের চাল পাইজাম ও হাস্কি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। আটাশ চাল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। মোটা চাল স্বর্ণা ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এসব চাল ৫ থেকে ৬ টাকা কম দামে বিক্রি হয়েছে।

বাজারে চালের দাম বাড়তে থাকায় সরকার আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তবে ডলার–সংকটের কারণে আমদানিতে গতি নেই। বাড়তি দামে এখন বড় চালানে চাল আমদানি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *