চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তাপমাত্রা দিন দিন কমে যাওয়ায় বেড়েছে চলছে প্রচন্ড শীতের প্রকোপ। এছাড়াও গেলো ১ সপ্তাহ ধরে কুয়াশার দেখা না গেলেও, সুর্যের দেখা মিলছে না। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের দেখা মিললেও, উত্তাপ ছিলনা বললেই চলে। এছাড়াও দিনের বেলায় কিছুটা সূর্য দেখা গেলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে শুরু হচ্ছে হিমেল বাতাস। জানা গেছে, গেলো বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার পর থেকে শুরু হয় হাড় কাপানো ঠান্ডা।
এ কারণে জেলাতে জেঁকে বসেছে প্রচান্ড শীত। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল ও চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। শীত থেকে বাঁচতে শহরের ফুটপাত, মার্কেট ও ছোট ছোট দোকানগুলোতে গরম কাপড় ক্রয় করার উপচে পড়া ভিড়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের নিউমার্কেট, কলেজ রোডের সামনে, ও কোট এলাকায় সারি সারি বস্ত্রের দোকান সাজিয়ে বসেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এখানকার দোকানগুলোতে কম দামে শীতবস্ত্রসহ অন্যান্য বস্ত্র বিক্রয় করছেন ব্যবসায়ীরা। এসব এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষগুলো কমদামে কেনাকাটা করে থাকেন।
সাধারণ মানুষেরা এটাকে গরিবের মার্কেট বলে থাকেন। কিন্তু সেই মার্কেট এখন ধনীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠেছে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারাও হুমড়ি খেয়ে কিনছেন গরম কাপড়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিউ মার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় শীতার্ত মানুষের গরম কাপড় কেনার দৃশ্য। ফুটপাতের গুদড়ি পট্টি গরীবের মার্কেট হিসেবে পরিচিত থাকলেও সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে সকল পেশা-শ্রেণির মানুষ। আর বেকায়দায় পড়ছে ছিন্নমূল পরিবারের সদস্যরা। তাদের গরম কাপড় কেনার সামর্থ না থাকায় যবুথবু অবস্থায় পড়েছে।
ফুটপাতের দোকান গুলোতে কেউ কিনছেন লেপ-তোশক,কম্বল । আবার কেউ কেউ সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলার ও মোজাসহ বিভিন্ন ধরনের বস্ত্র কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। এখানকার অধিকাংশ ক্রেতা ছিন্নমূলের হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত্বদের আনাগোনা লক্ষ্যণীয়। রহমান আলী নামে একচাকুরিজীবি জানান হটাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। বড় বড় মার্কেটে গরম কাপড়ের দাম অনেক বেশি তাই ফুটপাতের দোকানগুলেতে কম দামে ক্রয় করার জন্য এসেছি। কামাল উদ্দিন নামে এক ক্রেতা জানান প্রচন্ড শীত পড়ায় গরম কাপড় কিনতে এসেছি, এই রকম শীত গত কয়েক বছরের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পড়েনি।
ফুটপাতের গরম কাপড় ব্যাবসায়ি সেন্টু ঢাকা মেইলকে বলেন নতুন বছর পড়ার পর থেকেই তাদের ব্যবসা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। নয়ন আলী নামে এক ব্যবসায়ী ঢাকা মেইলকে বলেন আমরা অনেকে ব্যাবসায়ী আছি বিশেষ করে শীতকালে এখানে অস্থায়ী দোকান বসাই। এখানে কম দামে ভালো মানের শীতবস্ত্র পাওয়া যায়। আগে শুধু গরীব মানুষেরা এখানে কাপড় কিনতেন। ইদানিং সকল পেশা-শ্রেণির পরিবারেরা নানা ধরনের বস্ত্র কিনতে ব্যস্ত।
কাজেম আলী নামে আরেক ব্যবসায়ী ঢাকা মেইলকে জানান প্রায় সপ্তাহ খানেক থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে তীব্র শীত পড়ায় বেচা বিক্রি অনেক বেশি তাই আমরা অনেক খুশি। গরম কাপড় ব্যবসায়ীরা জানান গড়ে প্রতিদিন তারা ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পযন্ত বিক্রি করে থাকেন। জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান বলেন, জেলায় প্রায় ২৪ হাজার কম্বল শীতাস্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।