গণপরিবহণে ভাড়া বাড়ানোর পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে অতীতের মতো এবারও পরিবহণকর্মী ও যাত্রীদের মধ্যে বচসা চলছে। কিন্তু এবার এ হয়রানিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ঢাকার গণপরিবহণে ১৬.২৭ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে দূরত্বভেদে দ্বিগুণেরও বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। পরিবহণকর্মীদের কথামতো অতিরিক্ত ভাড়া না দিলে যাত্রীদের হেনস্তা করা হয়। যাত্রীদের অভিযোগ, কোনো কোনো পরিবহণে যাত্রীদের ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার জন্য কর্মরত পরিবহণকর্মীদের পাশাপাশি বিশেষ বাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে।
এ অবস্থায় যাত্রীরা নিরুপায় হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাচ্ছে। এদিকে মালিক সমিতি এক সপ্তাহ আগে ওয়েবিল প্রথা বন্ধের ঘোষণা দিলেও তা এখনো কার্যকর হয়নি। কোনো যাত্রী এক কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করলে ওয়েবিলের নাম করে তার কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ১৫ টাকা; কোনো কোনো বাসে এ ভাড়ার পরিমাণ ২০ টাকা। ৬ কিলোমিটারের কম দূরত্বে ওয়েবিলের নাম করে একজন যাত্রীর কাছ থেকে আদায় করা হয় ৩০ টাকা; অথচ নিয়ম অনুযায়ী ভাড়া আসে ১৩ টাকা ২০ পয়সা। সিট হিসাব করেই বাড়তি ভাড়া নির্ধারণ করা হলেও প্রায় সব বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। এদিকে নতুন ভাড়া নির্ধারণের পর গ্যাসচালিত গাড়িগুলো এখন দেখা যাচ্ছে না। এসব গাড়িও তেলের গাড়ির মতোই বাড়তি ভাড়া আদায় করছে।
সম্প্রতি ওয়েবিলের নামে বাড়তি ভাড়া আদায়কারী গণপরিবহণের রুট পারমিট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান। তার এ ঘোষণার পরও বিভিন্ন বাসে ওয়েবিলের নামে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। এদিকে প্রতিটি বাস-মিনিবাসে ভাড়ার চার্ট টানানোর কথা থাকলেও অনেক বাসেই তা দেখা যায়নি। আবার যেসব বাসে তা দেখা গেছে, সেখানেও রয়েছে ফাঁকি। মিনিবাসগুলোতে টানানো হয়েছে বাসের ভাড়ার চার্ট।
সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও অনেক বাসে আদায় করা হচ্ছে ১৩ টাকা। যাত্রীদের জিজ্ঞাসা, সড়কে প্রকাশ্যে এমন ‘ভাড়া সন্ত্রাস’ চললেও এর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না কেন? অব্যাহত মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলা করতে গিয়ে মানুষ যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন গণপরিবহণে এমন নৈরাজ্য কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ নৈরাজ্যের অবসানে কর্তৃপক্ষ কঠোর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।