যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ১৭ মার্চ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার কাছ থেকে ‘হামলার হুমকি’ আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইনি এ প্রতিষ্ঠান।
বুধবার (২২ মার্চ) রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগের যুদ্ধাপরাধ আদালতে ‘হামলা চালানোর’ হুমকি দেন। এর আগে সোমবার (২০ মার্চ) আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খানের পাশাপাশি পুতিনের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করা বিচারকদের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করে ক্রেমলিন।
বুধবার এক টেলিগ্রাম বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারকদের উদ্দেশ্য করে মেদভেদেভ বলেন, সবাই সতর্কতার সঙ্গে আকাশের দিকে তাকান। আমরা ভাবতেই পারি, সাগরে অবস্থানরত রুশ যুদ্ধজাহাজ থেকে একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হেগের আদালত ভবনে আঘাত হেনেছে করেছে।
এ ঘটনার পর এক বিবৃতিতে আইসিসি বলে, আইনের অধীনে নিষিদ্ধ কাজগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে বাধা দেওয়ার এসব প্রচেষ্টা দেখে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার হয়ে থাকে।
‘সব দেশ আইনি সহায়তা পেতে শেষ অবলম্বন হিসেবে এ আদালতের শরণাপন্ন হয়। আমরাও সব রাষ্ট্রের বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতাকে সম্মান করার আহ্বান জানাই।’ আন্তর্জাতিক আদালত পুতিনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় শিশুদের নির্বাসিত করার অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে। প্রতিষ্ঠানটি বলে, রুশ প্রেসিডেন্ট নিজে ও অন্যদের সঙ্গে নিয়ে এ কাজ করেছেন- এমনটা বিশ্বাস করার যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।
শিশুদের নির্বাসিত করার ক্ষেত্রে অন্যদের আটকাতে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগে ব্যর্থ হয়েছেন পুতিন। সেদিন শুধু পুতিন নয়, রাশিয়ার শিশু অধিকারবিষয়ক কমিশনার মারিয়া আলেকসেয়েভনা লভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি। তবে পুতিন ও মারিয়ার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা সত্ত্বেও তাদের গ্রেফতারের ক্ষমতা নেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের।
কেবল যেসব দেশ আইসিসির সঙ্গে চুক্তিতে সই করেছে, সেসব দেশেই এখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারে আন্তর্জাতিক আদালত। রাশিয়া ওই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তাছাড়া অন্য কোনো দেশও যে পুতিনকে গ্রেফতার করে হস্তান্তর করবে, এমন সম্ভাবনাও কম।
সূত্র: আল-জাজিরা