নতুন করে দৈনিক করোনা সংক্রমণের তথ্য আর প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। নতুন করে করোনায় ভয়াবহ সংক্রমণ শুরুর পর থেকে সংক্রমণের সংখ্যা ও মৃত্যু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য ছড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিলো শি জিনপিং প্রশাসন। রোববার (২৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, রোববার থেকে দৈনিক করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আর প্রকাশ না করার কথা জানিয়েছে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন। তবে কেন এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, তার কোনো স্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি সংস্থাটি।
সংস্থাটি গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশটিতে দৈনিক শনাক্তের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, শুধু রেফারেন্স ও গবেষণার জন্য করোনাসংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সংস্থার মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে একদিনে দেশটিতে অন্তত ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গত শুক্রবার দেশটির সরকারের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনে প্রায় ২৫ কোটি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ। সে হিসাবে দৈনিক গড় সংক্রমণ ১ কোটি ২২ লাখ।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে চীনে দৈনিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল ৪০ লাখ মানুষ। সেই সংখ্যাকেও এবার ছাড়িয়ে গেছে দেশটি। বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি করোনার সংক্রমণ এই দেশে। যা চীনকে করোনার চতুর্থ ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের ধারণা, দেশটিতে এবার করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিচুয়ান প্রদেশ ও রাজধানী বেজিংয়ের অর্ধেকেরও বেশি বাসিন্দা এ ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, মহামারি থেকে রক্ষার কৌশল সম্পর্কে জনগণকে সঠিক সময়ে তথ্য সরবরাহ করতে না পারা ও বয়স্কদের টিকাদানে ব্যর্থতার কারণেই দেশটিতে নতুন করে করোনার ব্যাপক সংক্রমণ শুরু হয়েছে। জিরো কোভিড নীতি বাতিল করতে না করতেই চীনের করোনা পরিস্থিতির এমন ভয়াবহ অবনতি নিয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।