এ এফ মুজিবুর রহমান (আবুল ফয়েজ মুজিবুর রহমান) ১৮৯৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর জেলার গেরদায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মৌলবি আবদুর রহমান। প্রতিভাবান মানুষটি ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা পাশের পর ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি ও বিএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে প্রথম বাঙালি মুসলমান হিসেবে আইসিএস পাস করার গৌরব অর্জন করেন তিনি।
তিনি ১৯২০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগের মাস্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তিনি উপমহাদেশের প্রখ্যাত গণিতবিদ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখার্জির সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তির রেকর্ড ভঙ্গ করেন; যে অঙ্কের রেকর্ড কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজও বজায় রয়েছে।
পেশাজীবনে সিভিল সার্ভিসের বিচার বিভাগে দায়িত্ব পালনকালে ১৯২৯ থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় জেলা জজ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ন্যায়বিচারের প্রতি তাঁর একনিষ্ঠতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন মামলার রায়ে। এ মামলায় অম্বিকা চক্রবর্তীর মৃত্যুদন্ডের রায়ের ক্ষেত্রে তিনি ট্রাইব্যুনালের অপর দুজন সদস্য এ.ডি সি উইলিয়মস এবং এন.এইচ মুখার্জির সাথে ভিন্নমত পোষণ করে রায় দেন। পরে শাস্তির কঠোরতা হ্রাস করে হাইকোর্ট অম্বিকা চক্রবর্তীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেয়।
এ.এফ মুজিবুর রহমান কলকাতা, আসাম, শান্তিপুর, ত্রিপুরা, নদীয়া, ময়মনসিংহ এবং কুষ্টিয়াসহ অবিভক্ত বাংলা ও আসামের বিভিন্ন স্থানে প্রায় বাইশ বছর বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৫ সালে বাবার স্মরণে রেজাউর রহমান এ এফ মুজিবুর রহমান ফাউন্ডেশন নামে একটি দাতব্য ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেন। এই ফাউন্ডেশনটি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে, বিশেষত ঢাকা, জগন্নাথ, চট্টগ্রাম, খুলনা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছে। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গণিত বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতিবছর পুরস্কিত করে এই প্রতিষ্ঠানটি। এই ট্রাস্টটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ইনস্টিটিউট এবং গণবিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে। এএফ মুজিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এ এফ মুজিবুর রহমান গণিত ভবন নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন আট তলা গণিত ভবন ২০১৪ সালে উদ্বোধন করা হয়।